৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন কোষাধ্যক্ষের নিয়োগ বাতিলের দাবি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত কোষাধ্যক্ষ কর্নেল (অব.) আবু হেনা মোস্তফা কামাল খানের নিয়োগ ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বাতিলের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষকদের একাংশ। অন্যথায় তাঁরা কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। একই সঙ্গে তাঁকে দেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়িসহ অন্যান্য সুবিধা ১৯ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানানো হয়।
আজ রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় শিক্ষকদের সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোস্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান হাফিজ আশরাফুল হক এই দাবি জানান।
এর আগে ১ ডিসেম্বর কোষাধ্যক্ষকে দুর্নীতিগ্রস্ত ও পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর আখ্যা দিয়ে তাঁর নিয়োগ বাতিল চেয়ে ক্যাম্পাসে তাঁকে অসহযোগিতা করার ঘোষণা করেন শিক্ষকেরা। এই দাবির প্রতি সংহতি প্রকাশ করে স্বাক্ষর করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ১২৮ জন শিক্ষক।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে হাফিজ আশরাফুল বলেন, গত ২৬ নভেম্বর সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আবু হেনা মোস্তফা কামাল খানকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তদন্ত প্রতিবেদন ও অনেক সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, মোস্তফা কামাল খান চরমভাবে বিতর্কিত, দুর্নীতিগ্রস্ত ও পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর হিসেবে প্রমাণিত। বাংলাদেশের অর্ধশতাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শত শত যোগ্য ও দক্ষ শিক্ষক থাকা সত্ত্বেও সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তাকে কোষাধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়ায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন।
হাফিজ আশরাফুল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কোষাধ্যক্ষের নিয়োগ বাতিলের দাবি করেছি। এরপর দাবি আদায় না হলে আমরা পরবর্তী সময়ে কঠোর কর্মসূচি দেব। আমরা কোনোভাবেই এই কোষাধ্যক্ষকে মেনে নেব না।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খোরশেদ আলম ও মাহফুজ আলম, মার্কেটিং বিভাগের আব্দুল কাইউম, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সাদেকুর রহমান, সৈয়দ আশিক-ই-ইলাহী, লোকপ্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সিরাজিস সাদিক, মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের জামাল উদ্দীন, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের আব্দুল আলিম বাসের, সমাজকর্ম বিভাগের আবু জিহাদ, প্রভাষক মোস্তাকিম রহমান প্রমুখ।
নতুন নিয়োগ পাওয়া কোষাধ্যক্ষ আবু হেনা মোস্তফা কামাল খান তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে ভিত্তিহীন দাবি করে বলেন, তাঁরা যেসব অভিযোগ তুলেছেন, সেগুলো ভিত্তিহীন ও কাল্পনিক।