সেন্ট মার্টিনে নির্মাণাধীন ১২টি রিসোর্টের বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরের মামলা

সেন্ট মার্টিনফাইল ছবি

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার প্রতিবেশ-সংকটাপন্ন প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে নির্মাণাধীন ১২টি রিসোর্টের ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না নেওয়া এবং সরকারের আদেশ অমান্য করে অবকাঠামো তৈরির অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। গত বৃহস্পতিবার পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের পরিদর্শক ফাইজুল কবির বাদী হয়ে টেকনাফ মডেল থানায় মামলাটি করেন। আজ সোমবার বিষয়টি জানায় পরিবেশ অধিদপ্তর।

মামলার আসামিরা হলেন ট্রফিকানা বিচ রিসোর্টের মালিক শেখ ফরহাদ, জলকুটি রিসোর্টের মালিক মমি আনসারি, দক্ষিণা হাওয়ার মালিক ফেরদৌস সাগর, আরণ্যক ইকো রিসোর্টের মালিক মোহাম্মদ খাইরুল আলম, মেঘনা বিচ ভিউ রিসোর্টের মালিক মোশারফ হোসেন, ডিঙি ইকো রিসোর্টের মালিক মো. মোবাশ্বির চৌধুরী, জলকাব্য রিসোর্টের মালিক চপল কর্মকার ও চঞ্চল কর্মকার, গ্রিন বিচ রিসোর্টের মালিক আজিত উল্লাহ, সূর্যস্নানের মালিক ইমরান, সান অ্যান্ড স্যান্ড টুইন বিচ রিসোর্টের মালিক ইমতিয়াজুল ফরহাদ, নোঙর বিচ রিসোর্টের মালিক সাজ্জাদ মাহমুদ এবং নীল হাওয়ার মালিক আবদুল্লাহ মনির।

বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ অনুযায়ী, দেশে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন ১৩টি এলাকার (ইসিএ) একটি সেন্ট মার্টিন দ্বীপ। ইসিএ আইনমতে, এই দ্বীপে এমন কোনো কাজ করা যাবে না যার মাধ্যমে দ্বীপের পানি, মাটি, বায়ু বা প্রাণীর ক্ষতি হয়। এখানে কোনো প্রকার অবকাঠামো নির্মাণও করা যাবে না। ২০২২ সালে সরকার ঘোষিত একটি প্রজ্ঞাপনের সঙ্গে যুক্ত হয়। যে প্রজ্ঞাপনে সেন্ট মার্টিনকে মেরিন প্রোটেক্টেড এরিয়া ঘোষণা করে সরকার। ঘোষণা অনুযায়ী সেন্ট মার্টিনে ইট-সিমেন্ট নেওয়াও নিষিদ্ধ। দ্বীপটিতে শুধু বাঁশ-কাঠ দিয়ে পরিবেশবান্ধব অবকাঠামো করা যেতে পারে।

তবে এসব নিয়ম থাকা সত্ত্বেও দ্বীপটিতে নানা ধরনের ইট-সিমেন্টের অবকাঠামো তৈরি হয়ে আসছিল। এ বিষয়ে গত বছরের মার্চে প্রথম আলোতে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ এসব স্থাপনা বন্ধের বিষয়ে তৎপর হয়ে ওঠে।

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গণি মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মামলাটি পরিবেশ অধিদপ্তরই তদন্ত করবে।

মামলার বাদী ও পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের পরিদর্শক ফাইজুল কবির বলেন, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে সরেজমিনে তদন্ত করে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়। তদন্তের সূত্র ধরেই ১২ প্রতিষ্ঠানের ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।