খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৮ জুলাই শহীদ মীর মুগ্ধ দিবস পালন করার দাবি

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত মীর মাহফুজুর রহমানের (মুগ্ধ) স্মরণসভা গতকাল রোববার অনুষ্ঠিত হয়ছবি: প্রথম আলো

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত ডিসিপ্লিনের (বিভাগ) ১৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে ওই সভা আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

সভায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে পাঁচটি সুনির্দিষ্ট দাবি তুলে ধরেন শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলো হলো ১৮ জুলাই শহীদ মীর মুগ্ধ দিবস হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান ও যথাযথ মর্যাদায় পালন করা, প্রধান ফটকের নাম শহিদ মীর মুগ্ধ তোরণ হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়া, টিএসসির সামনে শহীদ মীর মুগ্ধর স্মরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ ও স্মৃতিফলক নির্মাণ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে রাষ্ট্রের কাছে শহীদ মীর মুগ্ধ হত্যার বিচার চেয়ে আবেদন এবং ওই আন্দোলনে সব শহীদের স্মরণে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাদুঘরে জুলাই গণহত্যা নামে একটি স্মৃতি কর্নার করা।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও আর্থিক কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক রেজাউল করিম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো ন্যায্য। এ বিষয়ে আমার যা করণীয় আছে, তা করব। তবে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ না পর্যন্ত এ দাবিগুলো পূরণ করা সম্ভব হবে না।’

এসব দাবির সঙ্গে রেজাউল করিম যোগ করে বলেন, ‘মুগ্ধর স্মৃতির উদ্দেশ্যে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক আবাসিক হল, প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনে “মুগ্ধ পানি সরবরাহ কর্নার” করা হবে। মৃত্যুর আগে আন্দোলনের মধ্যে “পানি লাগবে, পানি”—মুগ্ধর এই কথা আমাদের হৃদয়ে গেঁথে আছে। তাই দেশের প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে “পানি লাগবে পানি”—এই স্লোগান লিখে মুগ্ধ কর্নার করার উদ্যোগ নিতে হবে। যার শুরুটা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হবে; পর্যায়ক্রমে তা দেশে ছড়িয়ে পড়বে। মুগ্ধর এই মুগ্ধতা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে হবে।’

রেজাউল করিম আরও বলেন, ‘মুগ্ধ-আবু সাঈদরা নিজেদের জীবন দিয়ে দেশকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। মুগ্ধদের আত্মত্যাগ দেশকে নতুন স্বপ্ন দেখিয়েছে। এখন তাদের স্বপ্ন আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। শিক্ষার্থীরা নতুন স্বাধীনতার পর যেভাবে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, দেশ সংস্কার এবং বন্যার পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে, তা প্রশংসার দাবি রাখে।’

স্মরণসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক এস এম মাহবুবুর রহমান, শহিদ মীর মুগ্ধর বড় ভাই মীর মাহমুদুর রহমান দীপ্ত ও যমজ ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। সভাপতিত্ব করেন গণিত ডিসিপ্লিনের প্রধান অধ্যাপক আজমল হুদা। আরও বক্তব্য দেন কলা ও মানবিক স্কুলের ডিন অধ্যাপক শাহজাহান কবীর, পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের প্রধান অধ্যাপক হারুনর রশীদ খান, গণিত ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক এ টি এম জহিরুদ্দিন প্রমুখ।