শেরপুর জেলা কারাগার ৪ মাস পর সীমিত পরিসরে সচল
শেরপুর জেলা কারাগার চার মাস পর সীমিত পরিসরে সচল হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে শেরপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে পাঠানো ১৩ বন্দীকে নিয়ে সীমিত পরিসরে জেলা কারাগারের কার্যক্রম শুরু হয়।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর শেরপুর পৌরসভার দমদমা কালিগঞ্জ এলাকায় অবস্থিত শেরপুর জেলা কারাগারে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় কারাগারে থাকা বন্দীরা পালিয়ে যান। কারাগারে থাকা অস্ত্র ও মূল্যবানসামগ্রী লুট করার ঘটনাও ঘটে। এতে কারাগারটি অচল হয়ে পড়ে।
এ বিষয়ে নতুন দায়িত্ব পাওয়া কারা তত্ত্বাবধায়ক শফিকুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, দুর্বৃত্তদের হামলায় অকার্যকর হয়ে পড়ার পর গণপূর্ত বিভাগের মাধ্যমে কারাগারের সংস্কার কাজ চলছিল। প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে সংস্কার কাজের ইতিমধ্যে ৮০ ভাগ শেষ হয়েছে। সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ দুটি প্রাক্কলনের কাজ এখনো অবশিষ্ট আছে। তবে শেরপুরের বন্দীদের জামালপুরে আনা-নেওয়াসহ নানা বাড়তি ঝামেলার বিষয়টি বিবেচনা করে পূর্ণাঙ্গ সংস্কার কাজ শেষ না হলেও প্রাথমিক পর্যায়ে ও সীমিত পরিসরে কারাগারটি সচল করা হয়েছে।
কারাগার সূত্রে জানা যায়, এখন থেকে নতুন বা পুরোনো মামলায় গ্রেপ্তার আসামিদের এই কারাগারেই আনা হবে। সেই সঙ্গে পর্যায়ক্রমে শেরপুরে আসামিদের সংশ্লিষ্ট মামলার শুনানি দিন জামালপুর জেলা কারাগারে বন্দীদের আদালতে হাজিরা শেষে শেরপুর কারাগারে আনা হবে। এভাবে পর্যায়ক্রমে পূর্ণাঙ্গভাবে শুরু হবে কারাগারটির কার্যক্রম।
সীমিত পরিসরে কারাগারটি সচল করার আগে শেরপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান মাহমুদ গতকাল বিকেলে সংস্কার করা কারাগার পরিদর্শন করেন। এ সময় আদালতের অন্যান্য বিচারক ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কারাগার সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ৫ আগস্ট বিকেলে ১০-১২ হাজার মানুষ লাঠিসোঁটা, রাম দা, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কারাগারের প্রধান ফটক ভেঙে কারাগারের ভেতরে প্রবেশ করে। তারা বন্দীদের ওয়ার্ড ভেঙে ফেলে ও তছনছ করে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় কারাগারে থাকা ৫১৮ জন বন্দী পালিয়ে যান। হামলাকারীরা কারাগারের ৯টি অস্ত্র, চায়নিজ রাইফেলের ৮৬৪টি গুলি, শটগানের ৩৩৬টি গুলি, খাদ্যসামগ্রী, টাকা-পয়সা লুট করে নিয়ে যায়। সেই সঙ্গে কারাগারের মূল্যবান রেকর্ডপত্র, গাড়ি ও বিভিন্ন স্থাপনা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।