পুকুরে ভাসছিল যমজ শিশুর লাশ, মা আটক
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় বাড়ির পাশের পুকুরে চার বছর বয়সী যমজ দুই ভাইয়ের লাশ পাওয়া গেছে। আজ রোববার সকালে উপজেলার বরমচাল ইউনিয়নের উত্তরভাগ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মারা যাওয়া দুই শিশু হলো উত্তরভাগ গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে রাদিয়ান আহমদ ও রাইয়ান আহমদ। এ ঘটনায় স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে শিশুদের মা রিমা বেগমকে (২৬) আটক করেছে পুলিশ। বাচ্চু মিয়া দুবাইপ্রবাসী। ছুটি পেয়ে প্রায় দেড় মাস আগে তিনি বাড়িতে আসেন।
কুলাউড়া থানার পুলিশ ও স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, বাচ্চু ও রিমা দম্পতির সাত বছর বয়সী তানিশা আক্তার নামের আরেক কন্যাসন্তান আছে। গতকাল শনিবার রাতে খাবার খেয়ে তিন সন্তানকে নিয়ে স্বামী-স্ত্রী ঘুমিয়ে পড়েন। আজ ভোর পাঁচটার দিকে বাচ্চু মিয়া ঘুম থেকে জেগে দেখেন, দুই ছেলে ও স্ত্রী পাশে নেই। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে বাড়ির পেছনে পুকুরঘাটে স্ত্রী রিমাকে ভেজা কাপড়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন। এ সময় শিশু রাদিয়ান ও রাইয়ান পুকুরে ভাসছিল। পরে স্বজনেরা দুই শিশুকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
কুলাউড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল আলিম বেলা ১১টার দিকে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, রিমা দুই সন্তানকে পুকুরের পানিতে ফেলে হত্যা করেছেন বলে স্বজনেরা অভিযোগ করেছেন। স্বজনেরা বলেছেন, রিমা তিন-চার মাস ধরে মানসিকভাবে অসুস্থ। তাঁর চিকিৎসাও চলছে। কয়েক দিন আগেও তিনি এক সন্তানকে পুকুরে ফেলার চেষ্টা করেন। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির সময় নিহত দুই শিশুর শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি বলে জানান এসআই আবদুল আলিম।
কুলাউড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ক্যশৈনু মারমা বলেন, রিমাকে বাড়ি থেকে আটক করা হয়েছে। দুই সন্তানকে হারিয়ে তিনি শুধু কান্নাকাটি করে যাচ্ছেন। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এ ব্যাপারে মামলা হবে। ময়নাতদন্তের জন্য দুই শিশুর লাশ মৌলভীবাজার জেলা সদরে অবস্থিত ২৫০ শয্যার হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।