শ্রীমঙ্গলে ১০ সাংবাদিকসহ ৫৭ জনের নামে মামলা
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ১০ সাংবাদিকসহ ৫৭ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করা হয়েছে। মামলায় আরও ৫০-৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার শ্রীমঙ্গল থানায় মামলাটি রেকর্ড হয়। মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সাবেক প্রচার সম্পাদক ও শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইদ্রিস আলী এই মামলার বাদী। মামলায় আরটিভির মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধিকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের ১১ জুন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে ও আরাফাত রহমান কোকো মেমোরিয়াল ট্রাস্টের উদ্যোগে শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে পিপিই (পার্সোনাল প্রোটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট) বিতরণ করা হয়। তারেক জিয়ার পিপিই বিতরণ করায় একই মাসের ২১ তারিখে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের উদ্যোগে প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে ইদ্রিস আলীকে বহিষ্কারের দাবি জানানো হয়। পরে সভা ডেকে প্রেসক্লাবের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি এম ইদ্রিস আলীকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়। এরপর ইদ্রিস আলীকে শ্রীমঙ্গলে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। গত চার বছর ইদ্রিস আলীকে হত্যাচেষ্টা, মানহানি করার সময় এ ঘটনায় মামলার আসামিরা জড়িত ছিলেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
মামলায় আসামি হওয়া সাংবাদিকেরা হলেন শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সভাপতি বিশ্বজ্যোতি চৌধুরী, সহসভাপতি ও বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার সাংবাদিক দীপংকর ভট্টাচার্য, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন, ক্রীড়া সম্পাদক মামুন আহমেদ, কার্যকরী সদস্য সনেট দেব চৌধুরী, শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আজাদুর রহমান, সহসভাপতি ও আরটিভির সাংবাদিক চৌধুরী ভাস্কর হোম, সাধারণ সম্পাদক ও একুশে টেলিভিশনের সাংবাদিক বিকুল চক্রবর্তী, দৈনিক খবরের কাগজ পত্রিকার হৃদয় দাশ এবং দৈনিক বাংলার সাংবাদিক এস কে দাশ সুমন।
মামলার বাদী ইদ্রিস আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘সে সময়ে আমার ওপরে অনেক অন্যায় অত্যাচার করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় আমি কোনো বিচার পাইনি। এখন যেহেতু বিচারব্যবস্থা ঠিক হয়েছে, তাই আমি মামলা করেছি।’
শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ইদ্রিস আলীর মামলা রেকর্ড করেছি। এই ঘটনায় একজন আটক হয়েছে। বাকিরা পলাতক।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী বলেন, যাঁরা আওয়ামী লীগের আমলে নির্যাতিত হয়েছেন, তাঁরা মামলা করছেন। অনেক সাংবাদিকও আওয়ামী ফ্যাসিবাদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। মামলাগুলোয় যেন কোনো নিরপরাধ মানুষ হয়রানিতে না পড়েন, সে বিষয়ে প্রশাসনকে গুরুত্ব দিতে বলেন তিনি।