শ্রীপুরে ঝুট ব্যবসা নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় ঝুট ব্যবসা নিয়ে বিএনপির অঙ্গসংগঠনের দুই পক্ষের দ্বন্দ্বে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তিনটি গাড়ি ভঙচুর করা হয়। ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্কও সৃষ্টি করা হয়।
বুধবার বেলা ১১টায় উপজেলার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বেড়াইদেরচালা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় মহাসড়কে আধা ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে পুলিশ ও সেনাসদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পৌর এলাকার বেড়াইদেরচালা গ্রামের এসকিউ সেলসিয়াস লিমিটেড নামের সোয়েটার কারখানার ঝুট ব্যবসা নিয়ে এ দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। সেখানে গাজীপুর জেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এস এম পলাশ চঞ্চলকে ঝুট কেনার জন্য কার্যাদেশ দেয় এসকিউ সেলসিয়াস কারখানা। সে অনুযাযী, বুধবার ট্রাক নিয়ে কারখানার ভেতর মালামাল লোড করছিলেন পলাশ। এ সময় কারখানার বাইরে হঠাৎ শতাধিক লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে উত্তেজিত হয়ে কারখানার ফটকে অবস্থান করেন। তাঁরা কারখানার পাশে থাকা পলাশের ব্যক্তিগত অফিস ভাঙচুর করেন। অফিসের সামনে থাকা কয়েকটি গাড়িও ভাঙচুর করেন তাঁরা। একপর্যায়ে আতঙ্ক ছাড়তে সেখানে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এরপর ট্রাকে করে ঝুট বের করা হয়।
স্থানীয় কয়েক বাসিন্দা বলেন, কারখানার বাইরে উত্তেজিত হওয়া লোকজন গাজীপুর জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক এস এম আবুল কালামের পক্ষ নিয়ে সেখানে এসেছিলেন। এক সপ্তাহ ধরে এসকিউ কারখানার ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে নিতে পলাশ ও আবুল কালামের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। সম্প্রতি কারখানাটি পলাশকে ঝুটের কার্যাদেশ দেওয়ার পর এই দ্বন্দ্ব আরও বড় আকার ধারণ করে। আজ বুধবার কারখানার বাইরে আবুল কালামের লোকজন আসার কিছুক্ষণ পর পলাশের লোকজন পাল্টা ধাওয়া দিয়ে তাঁদের সরিয়ে দেন। তাঁদের মধ্যে কয়েক দফা পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। দুই পক্ষের লোকজনের হাতে লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র ছিল।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আবুল কালাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ঝুট ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নই। আমি আজ ঢাকায় আছি। সেখানে কারা মারামারি করেছেন, তা আমি জানি না। তাঁরা আমার লোক নন। ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের জেরে ঝুট ব্যবসা নিয়ে এ ঘটনায় ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমাকে জড়াচ্ছেন তাঁরা। আমি এ ঘটনায় কোনোভাবেই জড়িত নই।’
পলাশ চঞ্চল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি বৈধভাবে অনুমতি নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছি। গত পাঁচ দিন আগে আমি ওই কারখানার ওয়ার্ক অর্ডার পেয়েছি। অথচ বুধবার মালামাল বের করতে গেলে আবুল কালাম তাঁর লোকজনকে দিয়ে আমার অফিসে ভাঙচুর চালিয়েছেন। মালামাল বের করতে বাধা দেন। ককটেল বিস্ফোরণ করে আতঙ্ক ছড়িয়েছেন। আমি এ বিষয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে জানিয়েছি। এ ছাড়া দলীয় ঊর্ধ্বতন পর্যায়েও জানাব।’
এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘ঝুট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। পরে খবর পেয়ে থানা–পুলিশ, শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। এ ঘটনায় তদন্ত হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’