বান্দরবান জেলা শহরের মারমা বাজার এলাকায় সাঙ্গু নদের পাড় ভেঙে সাতটি পরিবারের বসতঘর পানিতে বিলীন হয়ে গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। এলাকার বিভিন্ন স্থানে আরও প্রায় ৫০টি ফাটল দেখা গেছে। যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় প্রায় ১৫০টি ঘরবাড়ি থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
মারমা বাজারের আহম্মদের গলির মাথায় গিয়ে দেখা যায়, পাহাড়ি ঢলে ফুলে ফেঁপে ওঠা সাঙ্গু নদের পানি কমতে শুরু করায় তীরের বেশ কিছু স্থানে ভাঙন ধরেছে। নদের তীর ঘেঁষে রয়েছে অসংখ্য ঘরবাড়ি। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে পাকা ও কাঁচা বাড়িগুলোর নিচের নরম পলি মাটি সরে গিয়ে সেগুলো পড়ে যাচ্ছে। এতে পুরো এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলে জানান এলাকাবাসী।
পৌরসভার মেয়র সামসুল ইসলাম জানান, এলাকার দরিদ্র পরিবারগুলো নদের তীরে ঘরবাড়ি তুলে বসবাস করে আসছে। তবে বন্যার কারণে লোকজন আগে থেকেই অন্যত্র আশ্রয় নেওয়ায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। বন্যা ও নদীভাঙনে যাঁরা গৃহহারা হয়েছেন, তাঁদের তালিকা করা হবে। গতকাল থেকে নদীপাড়ের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার লোকজন সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
মারমা বাজারের লোকজন জানান, সন্ধ্যায় বিকট আওয়াজে প্রথমে রেখা দাশের দ্বিতল পাকা বাড়ি ধসে নদে বিলীন হয়ে যায়। এরপর সানু বড়ুয়া, রূপনা বড়ুয়া, গীতা দাশসহ আরও ছয় পরিবারের আধা পাকা ও কাঁচা বাড়ি ভেঙে পড়ে। পৌরসভার কোনো অনুমোদন ছাড়াই এসব ঘরবাড়িতে বসবাস করতেন তাঁরা।
রূপনা বড়ুয়া ও সানু বড়ুয়া ভেঙে পড়া বাড়ির পাশে বসে বিলাপ করছিলেন। তাঁরা বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। জায়গাজমি না থাকায় নদের পাড়ে বসবাস করি। এখন আর যাওয়ার কোনো জায়গা রইল না।’
পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওমর ফারুক বলেন, মারমা বাজারের আহম্মদের গলির পুরো এলাকাটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ৫০টি কাঁচা ও আধা পাকা ঘরবাড়িতে ফাটল ধরেছে। সেগুলো যেকোনো মুহূর্তে ধ্বসে পড়বে। সেখানে আরও প্রায় ১০০টি পরিবার ঝুঁকিতে রয়েছে। ঘরবাড়ি পানিতে ডুবে যাওয়ায় কেউ কেউ অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। যাঁরা বাড়িতে ছিলেন পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় তাঁদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।