ভূমিদস্যু ও ডাকাত সর্দারও ছিলেন কাউন্সিলর

চট্টগ্রাম নগরের আকবর শাহ থানার লেকসিটি আবাসিক এলাকায় কালির ছড়া খাল পরিদর্শন সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন। আজ দুপুরেছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগের আমলে ভূমিদস্যু ও ডাকাত সর্দারও ওয়ার্ড কাউন্সিলর ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন।

আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম নগরের আকবর শাহ থানার লেকসিটি আবাসিক এলাকায় কালির ছড়া খাল পরিদর্শনের সময় এই মন্তব্য করেন সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন।

এর আগে গত ২৩ অক্টোবর লেক সিটি আবাসিক এলাকায় খালের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করে জেলা প্রশাসন। উচ্ছেদ চলাকালে স্থানীয় একদল মানুষ ম্যাজিস্ট্রেট ও স্থানীয় এক পরিবেশকর্মীর ওপর চড়াও হয়েছিলেন।

আজ খাল পরিদর্শনের সময় সিটি করপোরেশনের মেয়র ও নগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন বলেন, কালির ছড়া খালটি চট্টগ্রামের আকবর শাহ এলাকায় অবস্থিত। দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে পাহাড় কাটার কারণে এই খালের অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। এখানে পাহাড় যাঁরা কেটেছেন, তাঁরা দীর্ঘদিন ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের পোষ্য ছিল। একেকজন কাউন্সিলর ছিলেন ভূমিদস্যু, একেকজন ডাকাতের সরদার ছিলেন। এই যে জসিম (উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. জহুরুল আলম) সে একজন ভূমিদস্যু। পাহাড় কাটার জন্য তিনি বিখ্যাত ছিলেন। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সরকার কোনো আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। তারা তাঁকে গ্রেপ্তারও করেনি এবং শাস্তির আওতায় আনতে পারেনি।

পাহাড় কাটার পেছনে অনির্বাচিত শক্তি কাজ করেছে দাবি করে মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘রাষ্ট্র এ সমস্যার জন্য দায়ী। ভোটের অধিকার হরণ করে অপরাধীদের কাউন্সিলর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এই অপরাধীদের মাধ্যমে দখল, লুটপাট ও দুর্নীতির শিকার হয়েছে শহরটি। ১৬ বছর ধরে চলা এই অব্যবস্থাপনার কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি বাড়ছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের ক্ষমা করবে না যদি আমরা তাদের জন্য বাসযোগ্য পরিবেশ রেখে যেতে ব্যর্থ হই।’

চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে কালির ছড়াসহ সব খাল উদ্ধারের পাশাপাশি পাহাড়খেকোদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, এখানে কালির ছড়া খাল দেখতে এসেছেন। একসময় চট্টগ্রামে প্রায় ৫৭টি খাল ছিল। কিন্তু আজ এই সংখ্যা নেমে এসেছে মাত্র ৩৬টিতে। জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য সিডিএর উদ্যোগে যে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, সেখানে ৫৭টি খাল থেকে কাজের জন্য ৩৬টি খাল চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে এখনো ২১টি খাল অবহেলিত রয়ে গেছে। তাঁরা এই ২১টি খাল উদ্ধার করার চেষ্টা করছেন।

খালখেকোদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে মেয়র বলেন, ‘দখলদারদের আইনের আওতায় এনে খালগুলোকে পুনরুদ্ধার করব। খাল থাকবে খালের জায়গায় এবং নালা থাকবে নালার জায়গায়। পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’

কালির ছড়া খাল পরিদর্শনের সময় উপস্থিত ছিলেন সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুল ইসলাম, মাহমুদ শাফকাত আমিন, উপপ্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্মা, মেয়রের একান্ত সহকারী মারুফুল হক চৌধুরীসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।