সহকর্মীকে ভালোবেসে এলেন কুমিল্লায়, বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন ইন্দোনেশীয় তরুণী
মালয়েশীয় একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন কুমিল্লার যুবক আহাম্মদ উল্লাহ ইমতিয়াজ ওরফে অপু (৩২) ও ইন্দোনেশীয় তরুণী নাজিফা মুনজারিন ওরফে সিনতা (২৫)। কাজের সূত্রে পরিচয়, এরপর প্রেম। একপর্যায়ে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন দুজনে। বিয়ে করতে সম্প্রতি দুজনেই এসেছেন কুমিল্লায়।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে কুমিল্লা নগরের ঝাউতলা এলাকার একটি হোটেলে তাঁদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে শহরের বাগিচাগাঁও এলাকার একটি পার্টি সেন্টারে হয় গায়েহলুদের অনুষ্ঠান।
আহাম্মদ উল্লাহ ইমতিয়াজ কুমিল্লা নগরের রেসকোর্স এলাকার শামসুদ্দিন আহাম্মদ ও ফরিদা ইয়াসমিন দম্পতির ছেলে। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার ছোট। আর নাজিফা মুনজারিন সিনতা ইন্দোনেশিয়ার মেডান রাজ্যের তেবিংতিংগি এলাকার বাসিন্দা উইলিয়াম সিনাগা ও মাসনিয়ার ডুলকের মেয়ে। সিনতা জন্মগতভাবেই খ্রিষ্টধর্ম পালন করতেন। গত ২৭ সেপ্টেম্বর অপুর সঙ্গে মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে আসেন সিনতা। এরপর ইসলামধর্ম গ্রহণ করে বসেন বিয়ের পিঁড়িতে। দুই পরিবারের সম্মতিতেই সিনতাকে বিয়ে করেছেন বলে জানিয়েছেন বর আহাম্মদ উল্লাহ ইমতিয়াজ। কিছুদিনের মধ্যেই ইন্দোনেশিয়া গিয়ে সেদেশের রীতিতে তাঁদের বিয়ের আরেকটি অনুষ্ঠান হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বিয়ের পর নাজিফা মুনজারিন সিনতা তাঁর ভাষায় বলেন, ইমতিয়াজের পরিবারের সবাই তাঁকে আপন করে নিয়েছে। ইমতিয়াজ মানুষ হিসেবে অসাধারণ। তাঁরা সবার কাছে দোয়া চান। পুরো জীবন একসঙ্গে কাটাতে চান। বাংলাদেশের মানুষের আন্তরিকতায় মুগ্ধ হওয়ার কথা জানিয়ে ভবিষ্যতে আবারও আসবেন বলে জানান তিনি।
নববধূতে মুগ্ধ বলে জানিয়েছেন আহাম্মদ উল্লাহ ইমতিয়াজের মা ফরিদা ইয়াসমিন। তিনি বলেন, ‘আমার তিনটা ছেলে, কোনো মেয়ে নেই। এ জন্য আমার মনেই হয় না আমার ঘরে নতুন বউ এসেছে। মনে হচ্ছে, আমার একটি মেয়ে ঘরে এসেছে। সিনতা আমার মেয়ে হয়েই থাকবে। বিদেশি মেয়েদের মনমানসিকতা এত সুন্দর হতে পারে, সেটা সিনতাকে না দেখলে বুঝতে পারতাম না। মেয়েটা আমাদের সবাইকে আপন করে নিয়েছে অল্প সময়ের মধ্যে।’
নিজেদের পরিচয়ের ঘটনা তুলে ধরে আহাম্মদ উল্লাহ ইমতিয়াজ বলেন, ‘একই কোম্পানিতে কাজ করার সুবাদে একপর্যায়ে ভালো বন্ধুত্ব হয় আমাদের। পরে প্রেমের সম্পর্ক হয়। প্রেম-ভালোবাসাকে সত্যিকারের রূপ দিতে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। সিনতা মালয়েশিয়ায় থাকলেও তাঁর পরিবার ইন্দোনেশিয়ায় বসবাস করেন। তিনি তাঁর পরিবারকে জানিয়েই বাংলাদেশে এসেছেন এবং পরিবারের সম্মতিতেই আমাকে বিয়ে করেছেন।’ কয়েক দিন বাংলাদেশে থাকার পর ইন্দোনেশিয়ায় ফিরে সেদেশের রীতি অনুযায়ী সিনতার পরিবারের পক্ষ থেকে আবার বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা পালন করা হবে বলে জানান ইমতিয়াজ।