খাটপাড়ার ‘রাজাবাবু’র যেমন তেজ, তেমন গর্জন, দাম হাঁকা হচ্ছে ২৫ লাখ

এবারের কোরবানির জন্য রাজাবাবু প্রস্তুত। গতকাল সোমবার সকালে মাদারীপুর সদর উপজেলার কুনিয়া ইউনিয়নের খাটপাড়া গ্রামে
ছবি: প্রথম আলো

‘রাজাবাবু’ নামে ডাকলেই গরুটি সাড়া দিচ্ছে। শোনা যাচ্ছে তার গর্জন। অপরিচিত মানুষ দেখলেই তেজ বেড়ে যায় কয়েক গুণ।

এই রাজাবাবুর দেখা মিলবে মাদারীপুর সদর উপজেলার কুনিয়া ইউনিয়নের খাটপাড়া গ্রামে। ইতিমধ্যে কোরবানির জন্য গরুটি কিনতে আশপাশের বিভিন্ন এলাকার ক্রেতারা খামারে এসে দরদাম করেছেন। তাঁরা অনেকেই রাজাবাবুর সঙ্গে ছবি তুলছেন। নানা ক্যাপশন লিখে পোস্ট করছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

নিজের সন্তানের মতোই ভালোবেসে গরুটি লালন-পালন করেছেন খাটপাড়া গ্রামের মফেল ভূঁইয়া। গরুটি প্রায় সাড়ে ৯ ফুট লম্বা ও ৬ ফুট উচ্চতাসম্পন্ন। ওজন ৪০ মণ ছাড়াবে। এবারের কোরবানির জন্য রাজাবাবু প্রস্তুত জানিয়ে মফেল ভূঁইয়া দাম হাঁকছেন ২৫ লাখ টাকা। তবে দাম নিয়ে কড়াকড়ির চেয়ে যিনি আদর ও যত্নসহকারে গরুটি কিনবেন, তাঁর জন্য বিশেষ ছাড় দেওয়া হবে জানালেন মফেল।

গরুটিকে নিজের সন্তানের মতোই ভালোবাসেন খামারি মফেল ভূঁইয়া
ছবি: প্রথম আলো

গতকাল সকালে সরেজমিন দেখা যায়, গোয়ালঘর থেকে বের করা হচ্ছে রাজাবাবুকে। যেমন তেজ, তেমন গর্জন। তাকে সামাল দিতে ব্যস্ত রাজাবাবুর মালিক মফেল ভূঁইয়া ও তাঁর দুই সন্তান। হাঁটার সময় শরীরের ভারে দোলে রাজাবাবু।

মফেল ভূঁইয়া প্রায় সাড়ে চার বছর ধরে নিজের সন্তানের মতো আদর–যত্ন করে পালছেন রাজাবাবুকে। গতবার কোরবানির ঈদে গরুটির দাম উঠেছিল ১০ লাখ টাকা। কিন্তু ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় আর বিক্রি করেননি গরুটিকে। এবার আরও যত্ন করে বড় করেছেন রাজাবাবুকে। গায়ে-গরতে প্রায় ৪০ মণ মাংস হওয়ার দাবি খামারির। তাই দামও হাঁকছেন ২৫ লাখ টাকায়।

খামারি মফেল ভূঁইয়া বলেন, সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে সবুজ ঘাস, খইল, ভুসি খাইয়েই গরুটিকে লালন পালন করেছেন। রোজ সাবান-শ্যাম্পু দিয়ে গোসল করান। পরম যত্নে গরুটিকে পালন করতে পরিবারের সদস্যরাও কষ্ট করছেন। আশা করছেন, এবার ন্যায্যমূল্য পেলে রাজাবাবুকে বিক্রি করবেন।

মফেলের মতো তাঁর ছেলে এমদাদ ভূঁইয়ার কাছেও পরম আদুরে রাজাবাবু। তিনি বলেন, ‘আমাদের বাড়ি এখন রাজাবাবুর জন্য পরিচিত হয়ে উঠছে। অনেকেই ওর সঙ্গে সেলফি তুলছেন। নাম ধরে ডাকলেই সাড়া দেয়, তখন খুব ভালো লাগে।’