কুষ্টিয়ায় শোবার ঘরে ঝুলে ছিল নারী পুলিশ সদস্যের লাশ
কুষ্টিয়া শহরের কমলাপুর এলাকায় ভাড়া বাসার শোবার ঘরে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে ছিল এক নারী পুলিশ সদস্যের লাশ। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় লাশটি উদ্ধার করে কুষ্টিয়া মডেল থানা-পুলিশ। এটি আত্মহত্যার ঘটনা বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে।
লাশ উদ্ধার হওয়া নারীর নাম রুবিনা খাতুন (২৮)। তিনি কুষ্টিয়া চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত পুলিশে কর্মরত ছিলেন। রুবিনা মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার রামনগর গ্রামের আবদুল শেখের মেয়ে। তাঁর স্বামীর নাম আলাল শেখ (৩০)। তিনি একই উপজেলার রতনপুর গ্রামের ফজলু শেখের ছেলে।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শিহাবুর রহমান বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি আত্মহত্যা। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের পর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শহরের কমলাপুর এলাকায় একটি বহুতল ভবনের তৃতীয় তলায় পরিবারের সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকতেন রুবিনা খাতুন। ২০১৩ সালে তিনি পুলিশে যোগদান করেন। এরপর কুষ্টিয়ার বিভিন্ন থানায় কর্মরত ছিলেন। সর্বশেষ আড়াই বছর ধরে কুষ্টিয়া আদালত পুলিশে কর্মরত ছিলেন। ২৫ ডিসেম্বর বড়দিনের ছুটিতে দুই ছেলেমেয়ে নানা বাড়িতে বেড়াতে যায়। আর স্বামী-স্ত্রী দুজনে বাসাতেই ছিলেন।
আলাল শেখের বরাত দিয়ে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম, অবস্ ও মিডিয়া) পলাশ কান্তি নাথ প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রুবিনা খাতুন শয়নকক্ষে প্রবেশ করে দরজা বন্ধ করে দেন। আলাল শেখ মনে করেন তাঁর স্ত্রী হয়তো ঘুমাচ্ছেন। এদিকে মুঠোফোন কোনো সাড়া না পেয়ে সহকর্মীরা রুবিনার পাশের ফ্ল্যাটের পরিচিত এক প্রতিবেশীকে বিষয়টি জানান। ওই প্রতিবেশী এসে আলাল শেখকে সহকর্মীদের ফোন করার বিষয়টি জানান। পরে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সহকর্মীরা তাঁর বাসায় যান। দরজা ধাক্কাধাক্কি করেই কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে বিষয়টি কুষ্টিয়া মডেল থানা-পুলিশকে জানানো হয়। পরে পুলিশের সহায়তায় দরজা ভেঙে দেখা যায়, ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় রুবিনার লাশ ঝুলে আছে।
পুলিশ জানায়, গতকাল সকালে রুবিনার সঙ্গে তাঁর স্বামীর রান্না নিয়ে ঝগড়া লাগে। এরপরই শোবার ঘরে ঢুকে রুবিনা দরজা বন্ধ করে দেন। তাঁর স্বামী কোনো কাজ করেন না। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।