দুই বছরের যত্নে ‘লাল বাহাদুরের’ ওজন ২৫ মণ, দাম ৮ লাখ

কোরবানির ঈদ উপলক্ষে বিক্রির জন্য আজ শুক্রবার হাটে তোলা হবে লাল বাহাদুরকে। গতকাল বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামেছবি: প্রথম আলো

দুই বছর আগে আড়াই লাখ টাকায় শান্ত প্রকৃতির গরুটিকে খামারে এনেছিলেন কবির হোসেন। দুই বছরের যত্নে পাকিস্তানের শাহি জাতের এই গরুর এখন ওজন হয়েছে ২৫ মণ। কোরবানির ঈদ সামনে রেখে ‘লাল বাহাদুর’ নামের গরুটি এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছে। বাহাদুরকে দেখতে কবির হোসেনের বাড়িতে প্রতিদিন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ ভিড় করে থাকেন।

কবির হোসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের শাহবাজপুর গ্রামের বাসিন্দা। আজ শুক্রবার স্থানীয় পশুর হাটে লাল বাহাদুরকে তোলা হবে বলে বলে জানিয়েছেন কবির হোসেন। দাম হাঁকবেন ৮ লাখ টাকা। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন ক্রেতা লাল বাহাদুরের দাম হেঁকেছেন পাঁচ লাখ টাকা।

আরও পড়ুন

কবির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, পাকিস্তানের শাহি জাতের এ গরুকে তিনি দুই বছর আগে আড়াই লাখ টাকা দিয়ে কিনেছিলেন। এই গরুকে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ কেজি ওজনের খইল, ভুসি, বুট, ছোলা, খড় ও ঘাস খাওয়াতে হয়। এতে আগে প্রতিদিন খরচ হয়েছে চার থেকে পাঁচ শ টাকা। এখন খরচও বেড়ে গেছে। এখন প্রতিদিন খরচ হচ্ছে ৮০০ টাকা।

আদর–যত্নে ‘লাল বাহাদুরকে’ লালন–পালন করেছেন খামারি। গতকাল বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামে
ছবি: প্রথম আলো

কবির হোসেনের ছোট ভাই আক্তার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, দুই বছর ধরে অনেক যত্ন করে লাল বাহাদুরকে লালন-পালন করেছেন তিনি। লাল বাহাদুরের এখন ওজন হয়েছে ২৫ মণ। উচ্চতা সাড়ে ৫ ফুট। তাঁদের খামারে লাল বাহাদুর ছাড়াও এখনো বিক্রির উপযুক্ত ১৫টি ষাঁড় রয়েছে। যেগুলোর দাম দেড় লাখ থেকে শুরু করে আট লাখ টাকা।

কবির হোসেন জানান, ১৪ বছর সৌদি আরব থাকার পর ২০১০ সালে দেশে ফিরে আসেন। প্রবাসজীবনের জমানো টাকা বিনিয়োগ করেন মাছ চাষের পেছনে। গড়ে তোলেন মৎস্য খামার। সুবিধা করতে পারেননি। লোকসান দেন প্রচুর টাকা। এরপর ২০১৮ সালে ছোট আকারের দেশি-বিদেশি জাতের ২০টি ষাঁড় নিয়ে নিজ বাড়িতে একটি খামার গড়ে তোলেন। দুই বছর পর যখন গরু বিক্রির উপযোগী হয়, তখন দেখা দেয় করোনা। যে কারণে তিনি তেমন কোনো মুনাফা পাননি।

আরও পড়ুন

তবে দমে যাননি কবির হোসেন। ২০২০ সালে খামারে নতুন করে গরু তোলেন। পরের বছর ১৬টি গরু বিক্রি করে চার লাখ টাকা আয় করেন। ২০২২ সালে তিনি মোট আয় করেন সাত লাখ টাকা। গত বছরও বেশ আয় করেন। এ বছর তিনি বড় আকারের লাল বাহাদুর ও লাল বাদশা নামের ২টি ষাঁড় গরুসহ ৩০টি গরু প্রস্তুত করেছেন আসন্ন কোরবানির হাঁটে বিক্রির জন্য। এরই মধ্যে লাল বাদশাহসহ ১৫টি ষাঁড় বিক্রি করেছেন ২৯ লাখ টাকায়।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোছাম্মৎ নাইফা বেগম বলেন, সরাইলে কোরবানির পশুর চাহিদা হচ্ছে ২০ হাজার। এখানে কোরবানিযোগ্য পশু আছে ২১ হাজার ২২৮টি। তিনি বলেন, কবির হোসেন গরুর খামার দিয়ে এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছেন। আশা করছেন এ বছর তিনি গরু বিক্রি করে বেশ লাভবান হবেন। এলাকার তরুণ-যুবকদের কাছে তিনি দিন দিন অনুকরণীয় হয়ে উঠছেন।

আরও পড়ুন