বরগুনায় নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার বিএনপি নেতার জামিন
বরগুনায় নাশকতার চেষ্টার মামলার এক আসামির জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদলতে তাঁর পক্ষে জামিন আবেদন করেন বরগুনা-১ (বরগুনা সদর, আমতলী এবং তালতলী উপজেলা) আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ (শম্ভু)। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন আদালত পুলিশ পরিদর্শক মাহবুবুর রহমান।
আসামি মতিউর রহমান (রাজা) সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। তিনি জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য। গত ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে নির্বাচিত হন তিনি।
চলতি বছরের নভেম্বরে সরকার পতন আন্দোলনে নাশকতা সৃষ্টির চেষ্টা ও বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহারের অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে স্থানীয় বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে বরগুনা সদর থানায় দুটি মামলা করে। এর মধ্যে দুটি মামলায় মতিউর রহমান এজাহারভুক্ত আসামি।
গত রোববার সন্ধ্যায় বরগুনা সদর উপজেলার গৌরিচন্না ইউনিয়নে গৌরিচন্না নওয়াব সলিমুল্লাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে নৌকা মার্কার জনসভায় বক্তব্য দিয়ে নৌকার পক্ষে ভোট চান ইউপি চেয়ারম্যান মতিউর রহমান। এরপর গতকাল সোমবার বেলা তিনটার দিকে বদরখালী ইউনিয়নের বাওয়ালকর এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। পরে নাশকতা সৃষ্টির চেষ্টা ও বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহারের অভিযোগে করা পৃথক দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মতিউরকে কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালত সূত্র জানায়, আজ বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ মতিউর রহমানের পক্ষে জামিন আবেদন করেন। জামিন শুনানিতে ধীরেন্দ্র দেবনাথ অংশ না নিলেও তাঁর পক্ষে ছেলে সুনাম দেবনাথ ও আইনজীবী তানজিবুল ইসলাম অংশ নেন। শুনানি শেষে দুটি মামলায়ই ধীরেন্দ্র দেবনাথের জিম্মায় পরবর্তী ধার্য তারিখ ১০ জানুয়ারি ও ২৯ জানুয়ারি (পৃথক দুটি মামলায়) পর্যন্ত মতিউরের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।
জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মোল্লা বলেন, ‘গত দুই মাসে আমাদের ১৪৭ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে কয়েক দিন আগে মাত্র পাঁচজনের জামিন হয়েছে। তা–ও প্রায় এক মাস জেল খেটে। মতিউর রহমান রাজার মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে জামিন হওয়ার বিষয়টি আমাদের অবাক করেছে।’
সরকার পতন আন্দোলনে নাশকতা সৃষ্টি মামলার আসামিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর জামিন করানো প্রসঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এটা একান্তই সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত নয়। তবে বিষয়টি নিয়ে আমরা বিব্রত।’
বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি ভুবন চন্দ্র হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আদালতের বিচারক চাইলে যেকোনো ব্যক্তিকে যেকোনো ব্যক্তির জিম্মায় জামিন দিতে পারেন। তবে আজকের জামিনের আদেশটি আমি এখন পর্যন্ত দেখিনি তাই সঠিক বিষয়টি বলতে পারছি না।’