অর্থের অভাবে আটকে আছে চা শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন

শ্রীমঙ্গলের ভাড়াউড়া চা বাগানফাইল ছবি: প্রথম আলো

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০১৮ সালে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, ২০২১ ও ২০২৪ সালে আরও দুটি নির্বাচন আয়োজনের কথা থাকলেও তা আর হয়নি। এর ফলে দীর্ঘ ছয় বছর ধরে দায়িত্বে আছে একই কমিটি।

দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা বলছেন, অর্থের অভাবে নির্বাচনের আয়োজন করা যাচ্ছে না। সরকার এ ব্যয় বহন করতে চাইছে না। আর এটির সাবেক নেতাদের দাবি, নির্বাচন না হওয়ায় নেতৃত্ব দুর্বল হয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রামভজন কৈরি বলেন, তিন বছরের জন্য বানানো কমিটি এখন ছয় বছর ধরে দায়িত্বে আছে। নতুন করে নির্বাচন না হওয়ায় সংগঠনটির নেতৃত্ব দুর্বল হয়ে পড়ছে। শ্রমিকদের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা ইউনিয়নের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। শ্রমিক ও মালিকদের মধ্যে হওয়া দ্বিপক্ষীয় চুক্তি দুর্বল হচ্ছে।

রামভজন কৈরি অভিযোগ করেন, মালিকদের কাছ থেকে সম্পূর্ণ বকেয়া মজুরি আদায় করতে পারছে না সংগঠনটি। নেতৃত্বে থাকা অনেক নেতাই নিষ্ক্রিয় এবং চাকরি থেকে অবসরে গেছেন। এর ফলে আন্দোলন বা চা–শ্রমিকদের হয়ে কথা বলার মতো নেতার সংখ্যা কমে যাচ্ছে। বর্তমান কমিটি নির্বাচন আয়োজনের জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেছে, এটি সত্য। কিন্তু সরকারকে বোঝাতে ব্যর্থ হচ্ছে তারা।

আন্দোলন বা চা–শ্রমিকদের হয়ে কথা বলার মতো নেতার সংখ্যা কমে যাচ্ছে। বর্তমান কমিটি নির্বাচন আয়োজনের জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেছে, এটি সত্য। কিন্তু সরকারকে বোঝাতে ব্যর্থ হচ্ছে তারা।
চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রামভজন কৈরি

চা শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনের জন্য আন্দোলন–সংগ্রাম করছেন জানিয়ে চা জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলন ফোরামের আহ্বায়ক পরিমল সিং বাড়াইক বলেন, ‘আমরা চাই, নির্বাচন হোক, যেন সঠিক নেতৃত্ব এসে চা–শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে কাজ করতে পারে।’

দীর্ঘদিন পরও নির্বাচন না হওয়ায় বর্তমান কমিটি অস্বস্তিতে আছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সহসভাপতি পঙ্কজ কন্দ। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন না হওয়ায় আমরাও দায়িত্বে থেকে একধরনের অস্বস্তিতে ভুগছি।’

নির্বাচন না হওয়ায় আমরাও দায়িত্বে থেকে একধরনের অস্বস্তিতে ভুগছি।
চা শ্রমিক ইউনিয়নের সহসভাপতি পঙ্কজ কন্দ

সার্বিক পরিস্থিতি জানতে বিভাগীয় শ্রম দপ্তর শ্রীমঙ্গলের উপপরিচালক ও বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ নাহিদুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি সাড়া দেননি।