চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলামের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে শিবগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ভোজের আয়োজন চলছে। আপিলে প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার খবর পেয়ে গত সোমবার রাত থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় তাঁর সমর্থকেরা এ আয়োজন করছেন।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে শ্যামপুর ইউনিয়নের শরতনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ও ওমরপুরে, দুর্লভপুর ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডে, শাহবাজপুর ইউনিয়নের হাজারবিঘী বাজারে, বিনোদপুর ইউনিয়নের বিনোদপুরে, চককীর্তি ইউনিয়নের চককীর্তি বাজারে ভোজের আয়োজন করা হয়।
তবে নির্বাচনী আচরণ বিধিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে, নির্বাচনী ক্যাম্পে ভোটারদের কোনো কোমল পানীয় বা খাদ্য পরিবেশন বা উপহার দেওয়া যাবে না।
শরতনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সৈয়দ নজরুল ইসলামের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে নৈশভোজের আয়োজনের নেতৃত্ব দেন শ্যামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আশরাফুল। তিনি বলেন, ‘এই শীতের দিনে কর্মীদের গোশত-ভাত খাইয়ে চাঙা করছি। নির্বাচনের পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে এ আয়োজন করা হয়েছে। বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় ওয়ার্ডেই চলছে এমন আয়োজন। প্রতিটি ওয়ার্ডেই এ আয়োজন চলবে। আমরা বিপুল ভোটে জয়লাভ করব বলে মনে করি।’ ভিডিওতে প্রার্থীর সমর্থক ছাড়াও শিশু–কিশোরসহ অনেককে খাবার খেতে দেখা যায়।
ইমন পাশা নামের একজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভোজের ভিডিও শেয়ার করেন। তাঁর আইডিতে তিনি নিজেকে শিবগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলে পরিচয় দিয়েছেন। ওই ভিডিওতে বলতে শোনা যায়, ‘নির্বাচন উপলক্ষে দুর্লভপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে জননেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম ভাইয়ের নৈশভোজ।’
প্রার্থীর কর্মীরা আরও বলেন, সোমবার অন্তত ১৭টি স্থানে ভোজের আয়োজন করা হয়েছিল। প্রতিটি আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন ৫০ থেকে ২০০ জন। এতে খরচ হয়েছে ১৫-২০ হাজার টাকা।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সৈয়দ নজরুল ইসলামের মুঠোফোনে কল দিলে তিনি ফোন ধরেননি।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আসলে সেখানে কী ঘটেছে, সেটা আমরা জানি না। আচরণবিধি লঙ্ঘিত হয়েছে কি না, সে ব্যাপারে এখন কিছু বলব না। জানার পর বলব।’
দলীয় নেতা-কর্মীরা বলেন, সৈয়দ নজরুল ইসলাম সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য সম্প্রতি শিবগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। কিন্তু দলীয় মনোনয়ন পাননি। পরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। ভোটার তালিকায় মৃত ব্যক্তির স্বাক্ষর থাকায় তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। পরে আপিল করে প্রার্থিতা ফেরে পেয়েছেন। এ আসনে আওয়ামী লীগে প্রার্থী সামিল উদ্দিন আহমেদ।