খাবার দোকানিকে মারধর করলেন ছাত্রলীগ নেতা

মারধরের ঘটনাটি ঘটে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকার এই খাবার দোকানে
ছবি: প্রথম আলো

খাবারের টাকা চাওয়া নিয়ে জাহাঙ্গীর বিশ্ববিদ্যালয়ে এক দোকানিকে মারধর করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এক নেতা। গত রোববার দিবাগত রাত একটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকার সিংগাইর হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী দোকানি মো. আবদুল কাদের দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাসে খাবার বিক্রি করেন। তাঁকে মারধর করা আল রাজী সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের ৪৫তম ব্যাচের আবাসিক ছাত্র এবং শাখা ছাত্রলীগের উপ ছাত্রবৃত্তিবিষয়ক সম্পাদক।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রোববার দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় সিংগাইর হোটেলে খাবার খেতে যান আল রাজী। খাবার শেষে নগদ টাকা না থাকায় পরে দিতে চাইলে দোকানি বাকি দিতে অস্বীকৃতি জানান। একপর্যায়ে ওই ছাত্রলীগ নেতা জানান, তাঁর কাছে ক্যাশ টাকা নেই, মোবাইল ব্যাংকিং ‘নগদ’–এ তিনি দিতে পারবেন। পরে দোকানি জানান, তাঁর ‘নগদ’ অ্যাকাউন্ট নেই ‘বিকাশ’ অ্যাকাউন্ট আছে। এ সময় দোকানে খাবার খেতে বসা অন্য একজন ক্রেতা জানান, তাঁর নগদ অ্যাকাউন্ট রয়েছে, তাতে টাকা পাঠালে তিনি দোকানদারকে ক্যাশ টাকা দিয়ে দেবেন। অনেকটা বাধ্য হয়ে আল রাজী পাওনা টাকা নগদ অ্যাকাউন্টে পাঠানোর পরই চড়াও হয়ে দোকানদারকে মারধর শুরু করেন। পরে দোকানে থাকা আরও দুই ছাত্রলীগের কর্মী এবং ক্রেতারা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন।

ভুক্তভোগী দোকানদার আবদুল কাদের কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘যে আমাকে মারধর করেছে, সে আমার ছেলের বয়সী। এই বুড়া বয়সে সে আমার শিক্ষিত স্ত্রীর সামনে মারধর করল। আমার স্ত্রীকেও সে ধমকিয়েছে।’

আল রাজীর সঙ্গে থাকা এক ছাত্রলীগ কর্মী বলেন, ‘ওই দোকানে খাবার খাওয়ার পর আল রাজী ভাই টাকা নগদ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে দিতে চেয়েছিলেন। পরে দোকানে থাকা এক সাংবাদিকের নগদ অ্যাকাউন্টে টাকা দিয়েছিলেন। এ সময় আমি দোকানের বাইরে ছিলাম। পরে এসে দেখি রাজী ভাই দোকানিকে একটা ঘুষি মেরেছেন। তখন আমি ভাইকে নিয়ে চলে গেছিলাম।’

তবে দোকানিকে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে আল রাজী সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই দোকানে গতকাল (রোববার) রাতে খেয়েছিলাম। আমার কাছে ক্যাশ টাকা ছিল না, তাকে নগদে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তার কাছে নগদ অ্যাকাউন্ট ছিল না। তাই অন্য এক ক্রেতার নগদ অ্যাকাউন্টে টাকা দিয়েছিলাম। তাকে মারধর করা হয়নি।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘এ ঘটনা আমার জানা নেই। যদি কেউ এমন করে থাকে, তবে সেটা কাম্য নয়।’