বাসচাপায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী নিহত, বিচারের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ
বাসের চাপায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী মাইশা ফৌজিয়া নিহতের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবিতে তৃতীয় দফায় বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে তিনটার পর তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে মহাসড়ক অবরোধ করেন।
গত বুধবার রাত নয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে মহাসড়ক পার হওয়ার সময় ‘নারায়ণগঞ্জ ট্রাভেলস’ নামের কুয়াকাটা থেকে বরিশালে আসা বেপরোয়া গতির একটি বাসের চাপায় পরিসংখ্যান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাইশা ফৌজিয়া মিম নিহত হন।
ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বাসটি জব্দ করে আগুন দেন। তখন বাসের চালক ও সহকারী পালিয়ে যান। এ ঘটনায় ওই দিন রাত সোয়া ৯টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত ৫ ঘণ্টা ও গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত ১০ ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় জড়িত ব্যক্তিদের বিচারসহ ১০ দফা দাবি জানানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, মাইশার মৃত্যু কোনো দুর্ঘটনা নয়, তাঁকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের মাধ্যমে বিচার করতে হবে। নিহত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, নিরাপদ সড়কসহ বাসমালিককে হাজির করার কথাও বলেছেন তাঁরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রাহাত হোসাইন প্রথম আলোক বলেন, আজ বাসের মালিকপক্ষ, স্থানীয় বাসমালিক সমিতির নেতা ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বসার কথা ছিল। কিন্তু বাসের মালিকপক্ষ ক্যাম্পাসে না আসায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আবার মহাসড়ক অবরোধ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শুচিতা শরমিন বলেন, ‘পুলিশ ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। বাসচালককে ধরতে পুলিশ প্রশাসন তৎপর আছে। আমরা আমাদের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের দাবিসহ মাইশার ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করেছি। বাসমালিককে দ্রুততম সময়ের মধ্যে হাজির করা হবে। এ ছাড়া নিরাপদ সড়কসহ শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন করার চেষ্টা চলছে।’
নিহত মাইশার মৃত্যুর পর গতকাল বেলা একটার দিকে তাঁর জানাজা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনের মহাসড়কে জানাজায় বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। এর আগে মাইশার লাশ বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আনা হয়।
মেয়ের মৃত্যুর খবর শুনে সকালে মাইশার বাবা মো. আলী হোসেন, মা ও অন্য স্বজনেরা বরিশালে পৌঁছান। জানাজা শেষে মাইশার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরিবারের চাওয়া অনুযায়ী লাশের ময়নাতদন্ত হয়নি। পরে তাঁর লাশ নিয়ে স্বজনেরা নেত্রকোনায় তাঁদের গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন।