দক্ষিণাঞ্চলে রোডমার্চ কর্মসূচির রোডম্যাপ চূড়ান্ত করল বিএনপি
সরকার পতনের এক দফা দাবি বাস্তবায়নে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে রোডমার্চ কর্মসূচির রোডম্যাপ চূড়ান্ত করেছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার রাতে বরিশালে সংবাদ সম্মেলন করে কেন্দ্রীয় নেতারা কর্মসূচির আদ্যোপান্ত ঘোষণা দেন।
কর্মসূচি অনুযায়ী আগামী শনিবার সকাল ১০টায় বরিশাল নগরের বঙ্গবন্ধু উদ্যান থেকে রোডমার্চ কর্মসূচি শুরু হবে। এতে নেতৃত্ব দেবেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমানসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
বরিশাল মহানগর বিএনপি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রোডমার্চের রোডম্যাপ ঘোষণা করেন স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান। তিনি বলেন, ‘শনিবার সকাল ১০টায় বরিশাল থেকে রোডমার্চ শুরু হবে। এরপর রূপাতলী হয়ে রোডমার্চটি ঝালকাঠি এলজিইডি মোড় হয়ে রাজাপুর, ভান্ডারিয়া হয়ে পিরোজপুরের শিয়ালকাঠি এলাকায় গিয়ে শেষ হবে। পথে বেশ কয়েকটি জায়গায় পথসভা হবে।’ তিনি বলেন, ‘রোডমার্চের জন্য প্রশাসনের কাছে অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছি। এখনো অনুমতি পাইনি। আশা করি, প্রশাসন অনুমতি দেবে। তবে অনুমতি না দিলেও কর্মসূচি হবে।’
সেলিমা রহমান বলেন, ব্যর্থ আওয়ামী লীগ সরকার ষড়যন্ত্র করে আরেকটি পাতানো নির্বাচন করে আবার ক্ষমতায় আসতে চাইছে। খালেদা জিয়াকে তারা বিনা চিকিৎসায় মেরে ফেলার চক্রান্ত করছে। এর বিরুদ্ধে জনগণকে জাগিয়ে তুলতে বিএনপি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি হিসেবে এই রোডমার্চ কর্মসূচি পালন করবে।
এর আগে মঙ্গলবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত রোডমার্চের রোডম্যাপ চূড়ান্ত করতে এক দফা সভা হয়। এতে বরিশালের ৬ জেলা ও ৪২টি উপজেলার বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা অংশ নিয়েছিলেন। তবে সেদিন রোডমার্চের রোডম্যাপ চূড়ান্ত করা যায়নি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার। এ ছাড়া যুগ্ম মহাসচিব হারুন অর রশিদ রোডমার্চ বাস্তবায়ন কমিটির দলনেতা, সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস আক্তার জাহান সমন্বয়কারী, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান ও মাহবুবুল হক সহকারী সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এতে দলের কেন্দ্রীয়, বিভাগীয়, জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতারা অংশ নেবেন।
সংবাদ সম্মেলনে স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, যুগ্ম মহাসচিব হারুন অর রশিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস আক্তার জাহান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবুল হোসেন খান, মেজবাহ উদ্দিন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান, সদস্যসচিব মীর জাহিদুল কবির উপস্থিত ছিলেন।
সরকার পতনের এক দফা দাবিতে ১৫ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। ১৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে নতুন এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এতে বলা হয়, ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত রোডমার্চ ও সমাবেশের মতো বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে দলটি। এ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ২৩ সেপ্টেম্বর বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে রোডমার্চ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।
দুই নেতার বাগ্বিতণ্ডা
সংবাদ সম্মেলন শুরুর আগে কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে চেয়ারে বসা নিয়ে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক ও মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব মীর জাহিদুল কবির। এরপর মীর জাহিদুল কবির সম্মেলনস্থল ত্যাগ করতে চাইলে কেন্দ্রীয় নেতারা তাঁকে শান্ত করেন। এরপর দ্বিতীয় দফায় দুই নেতা আবার বিতণ্ডায় জড়ালে মাহবুবুল হক সম্মেলনস্থল থেকে চলে যেতে উদ্যত হন। এ সময় মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান তাঁকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি সংবাদ সম্মেলনস্থল ত্যাগ করেন। এ সময় সেখানে কিছুটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
সংবাদ সম্মেলন শেষে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস আক্তার জাহান বলেন, বিএনপি একটি বড় রাজনৈতিক দল। তাই ভুল–বোঝাবুঝি থাকতেই পারে। এটা বড় কিছু নয়, সামান্য বিষয়। সব ঠিক হয়ে যাবে।