বদরগঞ্জে সাবেক এমপি ও মেয়রের বাসায় পুলিশের অভিযান, ছাত্রলীগের তিন নেতা গ্রেপ্তার
রংপুরের বদরগঞ্জে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য এবং পৌরসভার সাবেক মেয়রের বাসভবনে গত সোমবার রাতে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। তবে এ সময় তাঁরা বাসভবনে ছিলেন না। পরে রাতভর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে পৌর ও উপজেলা ছাত্রলীগের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন বদরগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের সদস্য আবু সুফিয়ান নোমান (২৯), ইসতিয়াক আহম্মেদ (২৫) ও উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য নুরাইন শাহ সার্জিল (২৫)। আবু সুফিয়ান ও ইসতিয়াক আহম্মেদের বাড়ি বদরগঞ্জ পৌরসভার বালুয়াভাটা ও নুরাইন শাহের বাড়ি শাহাপুর গ্রামে। তাঁদের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
থানা–পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, বদরগঞ্জ থানায় দায়ের করা অগ্নি–সন্ত্রাস, ভাঙচুর, লুটপাট ও নাশকতার অভিযোগে হওয়া একটি মামলায় ছাত্রলীগের ওই তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর বদরগঞ্জ থানায় ওই মামলাটি করেন একটি বেসরকারি টেলিভিশনের রংপুর ব্যুরো প্রধান বাদশাহ ওসমানী।
ওই মামলায় রংপুর–২ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম মো. আহসানুল হক ওরফে ডিউক চৌধুরী, বদরগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক ওরফে টুটুল চৌধুরীসহ ১৬৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। ওই মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি থাকলেও সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি। তবে ছাত্রলীগের আটক ওই তিন সদস্যের নাম ওই মামলার এজাহারে ছিল না।
ওই মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ৪ ও ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বদরগঞ্জ বাজারে পেট্রল বোমা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে ৭০ থেকে ৮০ জন ছাত্র-জনতা আহত হয়। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা দোকানপাট ভাঙচুর, মালামাল লুটপাট, ৩৫টি মোটরসাইকেলসহ একটি সরকারি গাড়ি পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে দেয়। এতে ওই দুই দিনে দেড় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি করা হয়েছে।
সাবেক সংসদ সদস্য ও মেয়রের বাড়িতে গত সোমবার রাতের অভিযানে নেতৃত্ব দেন বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আতিকুর রহমান। তিনি জানান, আটক ছাত্রলীগের ওই তিন নেতাকে অগ্নি–সন্ত্রাস, ভাঙচুর, লুটপাট ও নাশকতার অভিযোগে হওয়া মমামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের ধরতে অভিযান চালানো হলেও তাঁরা বাড়িতে ছিলেন না। তবে তাঁদের গ্রেপ্তারের প্রচেষ্টা চলছে।
এলাকার লোকজন বলেন, ওই সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক মেয়রের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে অতিষ্ট লোকজন গত ৪ আগষ্ট বদরগঞ্জ পৌরসভায় অবস্থিত তাঁদের বাসভবন আগুনে দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এ সময় তাঁরা পালিয়ে গেলে ৫ আগস্ট তাঁদের বাড়িতে লুটপাট চালানো হয়। তখন থেকে ওই সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক মেয়র বদরগঞ্জের ওই বাসভবনে ফেরেননি।