কুড়িগ্রামে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় শিক্ষকসহ গ্রেপ্তার আরও ৩

গ্রেপ্তার
প্রতীকী ছবি

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার রাতে দুই শিক্ষক ও এক পিয়নকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় এ নিয়ে গত দুই দিনে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।

গতকাল রাতে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন ভূরুঙ্গামারী নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক হামিদুর রহমান, সোহেল আল মামুন ও পিয়ন মো. সুজন। এর মধ্যে হামিদুর রহমান ও সোহেলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত মঙ্গলবার থানায় নিয়েছিল পুলিশ। এর আগে একই ঘটনায় নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমান, সহকারী শিক্ষক আমিনুর রহমান ওরফে রাসেল ও জোবাইর হোসেনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে নেহাল উদ্দিন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ কর্মকর্তা ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আদম মালিক চৌধুরী বাদী হয়ে মামলা করেন।

এদিকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি কমিটি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নেতৃত্বে, অন্যটি দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে দুটি কমিটি তদন্ত শুরু করেছে বলে জানা গেছে। কুড়িগ্রামের জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সামছুল আলম আজ বৃহস্পতিবার সকালে নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে গেছেন।

আরও পড়ুন

সামছুল আলম বলেন, ‘দুটি তদন্ত কমিটি দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের নির্দেশে কাজ শুরু করেছে। আশা করি, এ ঘটনার মূল রহস্য উদ্‌ঘাটন করতে পারব।’

কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় নতুন করে দুই শিক্ষক ও এক পিয়নকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রশ্নপত্রের বিষয়টি উপজেলা কমিটি তত্ত্বাবধান করে। পুলিশ শুধু নিরাপত্তা দেয়। এর বাইরে পুলিশের করার কিছু নেই।

প্রশ্নপত্র ফাঁসে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী-অভিভাবকেরা

প্রশ্নপত্র ফাঁসের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে জেলার শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় চারটি পরীক্ষা ইতিমধ্যে স্থগিত করেছে শিক্ষা বোর্ড। বিষয়টি শিক্ষার্থীদের মনে গভীর প্রভাব ফেলেছে।

মিজানুর রহমান নামের এক পরীক্ষার্থী বলে, ‘শিক্ষকদের মাধ্যমে যদি প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়, আমরা কী শিখব! কার ওপর ভরসা করব।’

প্রবীণ শিক্ষক সামিউল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটা দুঃখজনক ঘটনা। শিক্ষকদের কাছ থেকে এ ধরনের কাজ অনাকাঙ্ক্ষিত। আমি এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

এদিকে অন্য বোর্ডের প্রশ্ন দিয়ে হলেও স্থগিত হওয়া পরীক্ষা যথাসময়ে (১তারিখের মধ্যে) শেষ করার দাবীতে মানববন্ধন করেছেন এসএসসি পরীক্ষার্থীরা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন করেন পরীক্ষার্থীরা। এ সময় তাঁরা প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।

আরও পড়ুন