বিকট শব্দে অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণ, কেঁপে উঠল আশপাশের এলাকা

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী ইউনিয়নে অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণ। শনিবার বিকেলে উপজেলার কদমরসুল এলাকায়
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারী ইউনিয়নে একটি অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। বিস্ফোরণে আশপাশের অন্তত দুই বর্গকিলোমিটার এলাকা কেঁপে উঠেছে।

আজ শনিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে উপজেলার কদমরসুল এলাকায় ‘সীমা অক্সিজেন অক্সিকো লিমিটেড’ নামে একটি কারখানায় এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ ও হতাহতদের উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছেন।

আরও পড়ুন

বিস্ফোরণে পাঁচজন নিহত ও অন্তত ৩০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহাদৎ হোসেন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। হতাহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১২ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন ভাটিয়ারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন।

কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ বলেন, কীভাবে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে, এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। তাঁরা আগুন নিয়ন্ত্রণ ও আহত ব্যক্তিদের উদ্ধারে কাজ করছেন। সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদ বলেন, বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। পুলিশ উদ্ধারকাজে সহযোগিতা করছে।

অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণে আশপাশের অন্তত দুই বর্গ কিলোমিটার এলাকা কেঁপে ওঠে। শনিবার বিকেলে সীতাকুণ্ডের কদমরসুল এলাকায়
ছবি: সংগৃহীত

ভাটিয়ারী ইউপির চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, বিস্ফোরণের পর তিনি নিজে ঘটনাস্থল থেকে আহত চারজনকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছে দিয়েছেন। বাকিদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান।

বিস্ফোরণে হঠাৎ কেঁপে ওঠে আশপাশের দুই বর্গকিলোমিটার এলাকা। ঘটনাস্থলের এক কিলোমিটারের মধ্যে ইনফিনিয়া নামে একটি তৈরি পোশাক কারখানা আছে। বিস্ফোরণে ওই কারখানার জানালার গ্লাস ভেঙে যায়। কারখানার শ্রমিক রোকেয়া বেগম কাজ করছিলেন জানালার পাশে বসে। হঠাৎ শব্দে জানালার কাচ ভেঙে তাঁর শরীরের ওপর পড়ে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিকট শব্দে তিনি ভীত হয়ে যান। অল্পের জন্য তিনি জানালার ভাঙা কাচের আঘাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পেরেছেন।

আরও পড়ুন

বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থল দেখতে আসেন রিদওয়ানুল হক নামের মাদামবিবির হাটের এক বাসিন্দা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিস্ফোরণের পর কদমরসুল এলাকায় ঘন কালো ধোঁয়া ওপরের দিকে উঠতে দেখেন। ধোঁয়া অনুসরণ করে কারখানা এলাকায় গিয়ে দেখেন বীভৎস অবস্থা। একের পর এক আহত শ্রমিকদের বের করে আনা হচ্ছে। তিনি অন্তত ১২ জন শ্রমিককে বের করে নিয়ে যেতে দেখেছেন।

বিস্ফোরণে পাঁচজন নিহত ও অন্তত ৩০ জন হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাঁদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে
ছবি: প্রথম আলো

উৎসুক জনতা কারখানা এলাকায় ভিড় করছিলেন। পরে কারখানার ভেতর থেকে জানানো হয়, আরও অক্সিজেন সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাঁদের ঘটনাস্থল থেকে দূরে যেতে বলা হয়। তখন অনেকে দূরে চলে যান।

গত বছরের ৪ জুন রাতে ‘সীমা অক্সিজেন অক্সিকো লিমিটেড’ থেকে পৌনে এক কিলোমিটার দূরে বি এম কন্টেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণে অন্তত ৫০ জন নিহত ও দুই শতাধিক লোক আহত হয়েছিলেন।

আরও পড়ুন