মাদারীপুরে সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে ‘অ্যাসিড’ নিক্ষেপের অভিযোগ
মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় গৃহবধূর শরীরে দাহ্য পদার্থ নিক্ষেপের অভিযোগ পাওয়া গেছে সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে। এতে গৃহবধূর মাথা, মুখমণ্ডল ও শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে গেছে। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার মাদবরেরচর এলাকায় ওই গৃহবধূর বাড়িতে ঘটনাটি ঘটে। চিকিৎসকের ধারণা, ছুড়ে মারা দাহ্য পদার্থ অ্যাসিড হতে পারে।
ওই গৃহবধূর নাম সাদিয়া আক্তার (২০)। তিনি বর্তমানে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন। অভিযুক্ত সুমন শিকদার (২৬) স্পিডবোটের চালক। চার বছর আগে শিবচর উপজেলার মাদবরচরের সিরাজ শিকদারের ছেলে সুমন শিকদারের সঙ্গে লিটু হাওলাদারের মেয়ে সাদিয়া আক্তারের বিয়ে হয়। তাঁদের এক কন্যাসন্তানও আছে। পারিবারিক কলহের জেরে সম্প্রতি তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও প্রতিবেশী চন্দন রায় বলেন, বিবাহবিচ্ছেদের পর সুমন শিকদার দফায় দফায় সাদিয়ার বাবার বাড়িতে গিয়ে ঝামেলা সৃষ্টি করতেন। এ নিয়ে সাদিয়া থানায় অভিযোগ করলে শিবচর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইজারত হোসেন সুমনকে সাবধান করেন। পরে সাদিয়ার অন্য স্থানে বিয়ে ঠিক করে তাঁর পরিবার। এ খবর পেয়ে সুমন ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁর লোকজন নিয়ে গতকাল রাতে সাদিয়ার বাড়িতে হামলা চালান। একপর্যায়ে সাদিয়ার শরীরে দাহ্য পদার্থ ছুড়ে মারেন। স্বজনেরা সাদিয়াকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠান।
ঘটনার পর থেকে সুমন শিকদার পলাতক থাকায় অভিযোগের বিষয়ে তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আশিকুর রহমান বলেন, ওই গৃহবধূর মুখমণ্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে গেছে। পোড়ার ধরন দেখে মনে হচ্ছে, তাঁকে অ্যাসিড নিক্ষেপ করা হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
মাদারীপুরের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান (শিবচর সার্কেল) বলেন, প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আলমগীর হোসেন নামের একজনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে। ভুক্তভোগী পরিবারকে থানায় এজাহার দিতে বলা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।