ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে তিন চাকার যানে বিশৃঙ্খলা, পুলিশ নিষ্ক্রিয়
মহাসড়কে অবৈধ এসব যানবাহনের কারণে যানজটের পাশাপাশি প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবাধে চলছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, মিশুক, ভ্যানের মতো ছোট যানবাহন। এতে সড়কটিতে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। যানজটের পাশাপাশি প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে গাজীপুর মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মহাসড়কের আবদুল্লাহপুর মোড় থেকে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার ঘুরে দেখা যায়, সড়কটিতে চলাচল করছে অসংখ্য দূরপাল্লার বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহন। এর মধ্যেই পাল্লা দিয়ে চলছে অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, নছিমন, ভ্যানগাড়িসহ প্যাডেলচালিত রিকশা। এসব যানবাহন একে অন্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে কখনো মাঝসড়ক দিয়ে চলছে। দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছাতে কোনোটি আবার উল্টো পথে ছুটছে। মাঝেমধ্যেই দেখা দিচ্ছে যানজট। এই বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে কোথাও পুলিশের ভূমিকা চোখে পড়েনি।
জানতে চাইলে গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ জাহিদুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে সব সময়ই ট্রাফিক বিভাগকে বলি। আমি আবারও ট্রাফিক বিভাগকে বলব, যেন সড়কে এসব তিন চাকার যানবাহন উঠতে না পারে।’
স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবহনচালক চালকেরা জানান, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সড়কটিতে আগে থেকেই চলত তিন চাকার যানবাহন। তবে ২০২২ সালে মহানগর পুলিশ উদ্যোগ নিয়ে সড়কটিতে তিন চাকার যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। কিন্তু এক বছর না পেরোতেই গত বছর সেপ্টেম্বরে আবারও সড়কটিতে ধীরে ধীরে তিন চাকার যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় দায়িত্বরত ট্রাফিক পরিদর্শক মো. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘৫ আগস্টের পর একটু ফ্রি পেয়ে আশপাশের সব অটোরিকশা এসে মহাসড়কে উঠেছে। আমরা প্রতিদিনই মহাসড়ক থেকে অটোরিকশা আটক করি, বিভিন্ন শাস্তি দিই। কিন্তু তারপরও তারা সড়ক ছাড়ছে না। কিছু বলতে গেলে উল্টো খারাপ আচরণ করে।’
সড়ক–সংলগ্ন বোর্ডবাজার এলাকার বাসিন্দা মো. আরিফুর রহমান (২৯) গত ৯ সেপ্টেম্বর দুর্ঘটনার শিকার হন। তিনি মোটরসাইকেল চালিয়ে সালনা থেকে বোর্ডবাজারের দিকে ফেরার পথে ছয়দানা এলাকায় হঠাৎ করে উল্টো দিক থেকে আসা একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। তিনি সড়ক থেকে ছিটকে পড়ে আহত হন। আরিফুর বলেন, ‘ওই দিনের ঘটনায় আমাকে টানা এক সপ্তাহ চিকিৎসা নিতে হয়েছে। সেদিন আমার বাইক চালানোয় কোনো ভুল ছিল না। অটোরিকশাটি উল্টো পথে আসার কারণে আমাকে দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়েছে। এসব নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই।’
গুলিস্তান-গাজীপুর পরিবহনের চালক মো. ওহিদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘রিকশা-অটোরিকশার জ্বালায় আমরা ঠিকমতো গাড়িই চালাইবার পারি না। একটু পরপর যানজট লাইগ্যা যায়। ২০ মিনিটের রাস্তা যাইতে লাগে এক ঘণ্টা। যাত্রীরা আমাগোর লগে চিল্লায়।’