ছেলের সঙ্গে বাড়ি ফিরলেন সুন্দরবন থেকে উদ্ধার হওয়া সেই বৃদ্ধা

পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের বাদুজুলি খালের পাশে গাছের ডাল থেকে বৃদ্ধাকে উদ্ধার করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়
ছবি: প্রথম আলো

সুন্দরবনের গহিন থেকে উদ্ধার হওয়া শুকুরুননেছা নামের সেই বৃদ্ধা ছেলে রফিকুল ইসলামের সঙ্গে ঘরে ফিরলেন। গতকাল শুক্রবার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ওই বৃদ্ধার উদ্ধার হওয়ার খবর তাঁর ছেলে রফিকুল ইসলামের নজরে পড়ে। এরপরই যশোর জেলার মনিরামপুর এলাকা থেকে সাতক্ষীরা শ্যামনগরে ছুটে আসেন রফিকুল। পরে আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে শ্যামনগর থানা থেকে মাকে নিয়ে তিনি বাড়ি ফেরেন।

আরও পড়ুন

এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগোয়ালিনী স্টেশনের বাদুজুলি খালের পাশে গাছের ডাল থেকে ওই বয়স্ক নারীকে উদ্ধার করে লোকালয়ে নিয়ে আসেন শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা এলাকার দুই জেলে। ওই বৃদ্ধা কীভাবে বড় বড় নদী পার হয়ে সুন্দরবনের গহিনে গিয়েছিলেন; কত দিন সেখানে ছিলেন? যদি বেশি দিন সুন্দরবনে থেকে থাকেন, তাহলে তিনি সেখানে কী খেয়ে বেঁচে ছিলেন—এসব প্রশ্ন ঘিরে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে। এসব প্রশ্নের কোনো উত্তর মেলেনি বৃদ্ধা শুকুরুননেছার কাছ থেকে।

শুকুরুননেছার ছেলে রফিকুল ইসলাম জানান, তাঁর মা কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন। এর আগেও কয়েকবার মাকে হারিয়েছেন। একবার হারিয়ে যাওয়ার এক বছর পরে মাকে খুঁজে পেয়েছিলেন উল্লেখ করে রফিকুল বলেন, ‘আমি আমার মায়ের একমাত্র সন্তান। আমরা একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারের সদস্য। আমাদের গ্রামের বাড়ি খুলনার তেরখাদায়। আমার মামারা সরকারি চাকরি করেন। আমার বাবাও সরকারি চাকরি করতেন। আমার মা মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়াতে বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। ফলে বাবার চাকরি চলে যায়। বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করার পর থেকে মা আমার সঙ্গে যশোরের মনিরামপুরে থাকতেন।’

কবে থেকে মা নিখোঁজ হন, এমন প্রশ্নে জবাবে রফিকুল ইসলাম জানান, এক মাস ১০ দিন আগে তিনি যশোরের মনিরামপুর থেকে গ্রামের বাড়ি খুলনার তেরখাদায় পারিবারিক একটি কাজে গিয়েছিলেন। ওই সময় তাঁর মা–ও গ্রামের বাড়িতে আসার ইচ্ছা পোষণ করেন, কিন্তু নেননি। রফিকুল বলেন, ‘এর এক দিন পর আমার স্ত্রী খবর দেয়, মাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এরপর মাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও পাওয়া যাচ্ছিল না। বিভিন্ন আত্মীয়স্বজন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খবর ছড়িয়ে দিয়েও মায়ের সন্ধান মেলেনি।’ বড় বড় নদী পার হয়ে তাঁর মা কীভাবে গহিন সুন্দরবনে পৌঁছালেন, সেখানে কত দিন ছিলেন, কী খেলেন—এমন প্রশ্নের উত্তরে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মা এসব কিছুই বলতে পারছেন না।’

এ বিষয়ে শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির মোল্যা জানান, সুন্দরবন থেকে উদ্ধার হওয়া ওই নারীকে রফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি তাঁর মা বলে জানান। পরে খোঁজখবর নিয়ে তাঁর কাছে তাঁর মাকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই ব্যক্তি শ্যামনগর থানা থেকে তাঁর মাকে বাড়িতে নিয়ে গেছেন।