সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি কমেছে, হাওরে পরিস্থিতি অপরিবর্তিত

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার চেকনিকারা-ইসলামপুর সড়কে পানি থাকায় নৌকায় গ্রামে যাচ্ছেন লোকজন। আজ বৃহস্পতিবার সকালেছবি: খলিল রহমান

সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি কিছুটা কমলেও হাওর এলাকায় পরিস্থিতি অপরিবর্তিত আছে। বাড়িঘর, রাস্তাঘাট থেকে পানি না নামায় মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে। যাতাযাতের জন্য তাঁরা নৌকা ব্যবহার করছেন।

গত তিন দিন সুনামগঞ্জে এবং এর উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে তুলনামূলক কম বৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে পাহাড়ি ঢল নেমেছে কম। তাই জেলার প্রধান নদী সুরমার পানি কমেছে। এতে বন্যাকবলিত মানুষেরা কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের হিসাব অনুযায়ী, আজ বৃহস্পতিবার সকালে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে নেমেছে। সকাল ৯টায় শহরের ষোলঘর পয়েন্ট সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার সাত সেন্টিমিটার নিচে ছিল। বুধবার সকাল ৯টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত সুনামগঞ্জে বৃষ্টি হয়েছে ২৫ মিলিমিটার। একই সময়ে সুনামগঞ্জের উজানের ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি হয়েছে ৬৪ মিলিমিটার।

তবে নদীর পানি কমলেও হাওরে ও গ্রামীণ জনপদে পরিস্থিতি স্থিতিশীল আছে। মানুষের ঘরবাড়ি ও রাস্তঘাটে এখনো বন্যার পানি আছে। গ্রামীণ সড়কের পানি থাকায় যাতায়াতের ক্ষেত্রে ভোগান্তি পোহাচ্ছে মানুষ। তাহিরপুর-বিশ্বম্ভরপুর সড়কে এখনো সরাসরি যান চলাচল বন্ধ আছে।

আরও পড়ুন

তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন জানিয়েছেন, পানি কমছে। তবে ধীরে। এখনো কিছু কিছু আশ্রয়কেন্দ্রে লোকজন আছে। এবার তাঁর উপজেলায় পাহাড়ি ঢল নেমেছে বেশি। ভারী বৃষ্টি না হলেও পানি আরও কমবে।

তবে এখনো তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভরপুর, সদর উপজেলায় মানুষের ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাটে পানি আছে। কিছু কিছু এলাকায় মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আছেন। পৌর শহরের কালীপুর, হাসননগর, পাঠানবাড়ি, বড়পাড়া, জলিলপুর, ওয়েজখালী এলাকার মানুষের বাড়িঘরে পানি আছে। সদর উপজেলার মনোহরপুর এলাকার বাসিন্দা মইনুল ইসলাম বলেন, পানি তো কমছে না। রাস্তাঘাটে এখনো পানি। চলাফেরা করতে অসুবিধা হচ্ছে।

আরও পড়ুন

জেলা প্রশাসনের হিসাব অনুযায়ী, সুনামগঞ্জে ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৮৩১জন মানুষ বন্যাকবলিত। আশ্রয়কেন্দ্রে এখনো এক হাজারের মতো মানুষ আছেন। বন্যার্তদের মধ্যে বিতরণের জন্য গত ১৮ জুন থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ১ হাজার ৩৩৪ মেট্রিক টন চাল, নগদ ২৬ লাখ টাকা, শুকনা খাবার ৯ হাজার প্যাকেট, শিশুখাদ্যের জন্য ১০ লাখ টাকা, গোখাদ্যের জন্য ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এগুলো বিতরণ অব্যাহত আছে।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেছেন, নদীর পানি কমছে। বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে। হাওরেও পানি কমছে, তবে ধীরে। আগামী দুদিন হালকা ও মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। এতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হবে না।