সাড়ে ৮ বছর পর বিদেশ থেকে ফিরে দেখলেন আড়ার সঙ্গে ঝুলছে স্ত্রীর লাশ
প্রায় সাড়ে আট বছর পর আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ইরাক থেকে দেশে ফেরেন আলামিন মন্ডল। স্ত্রী-সন্তান আর পরিবারের সবাইকে নিয়ে কিছুদিন আনন্দে কাটানোর আশা ছিল তাঁর। কিন্তু সেই আনন্দ মাটি হয়ে গেছে। বাড়িতে ফিরে ঘরে ঢুকে দেখেন, আড়ার সঙ্গে স্ত্রী পপি বেগমের লাশ ঝুলছে। এ ঘটনা ঘটেছে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের জটু মিস্ত্রিপাড়া গ্রামে।
খবর পেয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানার পুলিশ গৃহবধূ পপি বেগমের লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল করেছে। ইরাকপ্রবাসী আলামিন মন্ডল ও পপি বেগম দম্পতির ঘরে ১৩ বছর বয়সী আদিব মন্ডল নামের ৮ম শ্রেণিপড়ুয়া এক ছেলেসন্তান রয়েছে।
প্রবাসী আলামিন মন্ডলের ছোট ভাই নয়ন মন্ডল প্রথম আলোকে জানান, প্রায় সাড়ে আট বছর পর ইরাক থেকে দেশে ফিরছিলেন তাঁর বড় ভাই আলামিন মন্ডল। তাঁকে আনতে গতকাল বুধবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে আলামিনের ছেলে আদিব মন্ডল, মা–চাচিসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা বিমানবন্দরে যান। এ সময় আলামিনের নানি এবং স্ত্রী পপি বেগম বাড়িতে ছিলেন। আজ দুপুর ১২টার দিকে আলামিনকে বহনকারী মাইক্রোবাস বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ায়। এ সময় তিন বছর আগে মারা যাওয়া বাবার কবর জিয়ারত করেন আলামিন।
নয়ন মন্ডল আরও বলেন, কবর জিয়ারত শেষে আলামিন তাঁর স্ত্রীকে দেখতে ঘরের দিকে ছোটেন। তার আগে তাঁর ছেলে আদিব মন্ডল ডাকাডাকি করতে থাকলেও তাঁর স্ত্রীর সাড়াশব্দ পাচ্ছিল না। ঘরের চারপাশ উঁকি দেওয়ার পর ঘরের ভেতরে একটি কক্ষের আড়ার সঙ্গে মায়ের লাশ ঝুলতে দেখে চিৎকার দেয় সে। এরপর লোহার শাবল দিয়ে ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে আলামিন এই দৃশ্য দেখে আহাজারি শুরু করেন। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যায় গোয়ালন্দ ঘাট থানার পুলিশ।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্যমতে দীর্ঘদিন পর আলামিন ইরাক থেকে দেশে ফিরে এসেছেন। তাঁকে আনতে পরিবারের সদস্যরা বিমানবন্দরে গেলেও আলামিনের স্ত্রী পপি বেগমকে সঙ্গে নেননি। ধারণা করা হচ্ছে, এ অভিমানে গৃহবধূ পপি বেগম আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। তবে এখন পর্যন্ত পরিবারের কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি।