শ্যামনগরে বেড়িবাঁধের কয়েকটি স্থানে ফাটল, সকাল থেকে আবারও বৃষ্টি, ঝোড়ো হাওয়া
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে সাতক্ষীরার উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধের কয়েকটি স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। দমকা বাতাসের সঙ্গে প্রবল বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন এলাকায় কিছু কাঁচা ঘর ভেঙে গেছে, উপড়ে পড়েছে গাছপালা। এ ছাড়া কিছু চিংড়িঘেরও ভেসে গেছে।
এদিকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়টি গতকাল রোববার রাত আটটার দিকে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানে। এরপর উপকূল থেকে শুরু করে সারা দেশে বৃষ্টি শুরু হয়। শ্যামনগরে দিবাগত রাত তিনটার পর থেকে দমকা বাতাস ও বৃষ্টি কমে যায়। তবে আজ সোমবার সকাল সাড়ে সাতটার দিক থেকে আবার দমকা বাতাস ও মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র মোংলার দক্ষিণ-পশ্চিম দিক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ উপকূল ও বাংলাদেশের খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম শুরু করে। ইতিমধ্যে রিমালের কেন্দ্র বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম শেষ করেছে। এটি প্রবল থেকে সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হচ্ছে। এরপর এটি নিম্নচাপে পরিণত হবে। ঘূর্ণিঝড়টির পুরো প্রভাব শেষ হতে আরও পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা লাগতে পারে।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগ-১–এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সালাউদ্দিন জানান, তাঁর এলাকার ৩৮০ কিলোমিটার বাধের মধ্যে বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের দুর্গাবাটি, গাবুরা ইউনিয়নের নেবুবুনিয়া ও পারসেমারিসহ কয়েকটি এলাকায় বাঁধ দুর্বল হয়ে পড়েছে। ওই সব এলাকায় স্থানীয় জনগণের সহযোগিতা নিয়ে বাঁধ রক্ষা করার চেষ্টা চলছে।
শ্যামনগরের মুন্সিগঞ্জ ও বুড়িগঙ্গালিনী ইউনিয়নে অনেক স্থানে ঘরের ছাউনি উড়ে গেছে। আবার কোথাও কোথাও গাছের ডাল ভেঙে পড়েছে। বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের দাতিনাখালি গ্রামে কয়েকটি কাঁচা ঘরবাড়ি ভেঙে পড়েছে। একাকার হয়ে গেছে মুন্সিগঞ্জ থেকে নীলডুমুর যাওয়ার সড়কের দুই পাশের চিংড়িঘেরগুলো। বিশেষ করে শ্যামনগর থেকে কালীগঞ্জগামী সড়কের দুই পাশের বেশ কিছু গাছপালা ভেঙে গেছে।
শ্যামনগর থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমেলে তাঁদের একাধিক দল শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলায় কাজ করছে। তাঁরা সারা রাত শ্যামনগর–কালীগঞ্জ সড়কের ওপরে ভেঙে পড়া গাছ সরিয়ে যোগাযোগব্যবস্থা চালু রেখেছেন।
সাতক্ষীরা জেলা রিমাল দুর্যোগ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত পর্যন্ত শ্যামনগর উপজেলার আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজিবুল আলম জানান, কোথাও কোনো বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির সংবাদ পাওয়া যায়নি। তবে কিছু কাঁচা ঘরবাড়ি ও গাছপালা ভেঙে পড়েছে। প্রবল বৃষ্টিতে কয়েকটি এলাকার চিংড়িঘেরের জমি একাকার হয়ে গেছে। কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা নিরূপণের চেষ্টা চলছে।