আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানালেন বিএনপির রুহুল কুদ্দুস

নাটোরে জেলা বিএনপির জনসভায় বক্তব্য দেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার (দুলু)। আজ দুপুরে তোলাছবি: প্রথম আলো

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কয়েক শত ছাত্র-জনতাকে হত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার (দুলু)। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নাটোর শহরের কানাইখালি চত্বরে এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ দাবি জানান তিনি।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনে ছাত্র-জনতাকে অভিনন্দন জানাতে আজ দুপুরে শহরের কানাইখালি চত্বরে জনসভাটির আয়োজন করে নাটোর জেলা বিএনপি। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ওই সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে দেন রুহুল কুদ্দুস তালুকদার।

রুহুল কুদ্দুস তালুকদার তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘রাতের ভোটে-বিনা ভোটে শেখ হাসিনা সরকার গঠন করেছিলেন। সন্ত্রাসী কায়দায় গত সাড়ে ১৫ বছর ক্ষমতা দখল করে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে। তাঁর গুন্ডাবাহিনী দিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীদের হত্যা করেছেন, কারাগারে বন্দী করে রেখেছেন। ছাত্র-জনতা কারও কথাতেই কর্ণপাত করেননি। দাবি আদায় করতে গিয়ে ছাত্র-জনতা গণহত্যার শিকার হয়েছে। সর্বশেষ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের দাবি না মেনে শত শত ছাত্র-জনতাকে হত্যা করেছে। নিরীহ নিরস্ত্র জনসাধারণকে গণহত্যার দায়ে তাই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।’

স্বাধীনতাযুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে জানিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় এই নেতা বলেন, শত শত ছাত্রছাত্রী ও জনতাকে হত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকেও নিষিদ্ধ করা হোক। একই কারণে জনতার আদালতে শেখ হাসিনার বিচার হওয়া উচিত।

রুহুল কুদ্দুস আরও বলেন, ‘গত সাড়ে ১৫ বছর আওয়ামী লীগের গুন্ডারা এই কানাইখালি চত্বরে বিএনপিকে সভা-সমাবেশ করতে দেয়নি। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সত্তরোর্ধ শহিদুল ইসলাম ও সদস্যসচিব রহিম নেওয়াজকে একাধিকবার কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। আমার বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। আমি কোনো প্রতিশোধ নিতে চাই না। আমার নেতা-কর্মীরাও যেন নাটোরের সংখ্যালঘু ভাই বোনদের, আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের কোনো ধরনের নির্যাতন না করেন। কারও বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ পেলে তাঁকে কঠিন শাস্তি দেওয়া হবে।’

রুহুল কুদ্দুস তালুকদার আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার ভারতে চলে যাওয়ার সমালোচনা করে বলেন, ‘আপনি ভারতে পালিয়ে গিয়ে আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। এ দেশের মাটিতে আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব থাকবে না। এ জন্য বিএনপিকে কিছুই করতে হবে না।’

জনসভায় জেলা বিএনপির সদস্যসচিব রহিম নেওয়াজ, সাবেক সংসদ সদস্য কাজী গোলাম মোর্শেদ, সাবেক মেয়র কাজি শাহ আলম প্রমুখ বক্তব্য দেন। জেলা বিএনপির যুগ্ম সদস্যসচিব ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহীন সভায় সঞ্চালনা করেন।