ঘন কুয়াশার কারণে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে প্রায়ই ফেরি চলাচল বন্ধ থাকছে। আজ শুক্রবার সকালে এই নৌপথে ফেরিসহ অন্য নৌযান চলাচল তিন ঘণ্টার বেশি সময় বন্ধ ছিল। এ সুযোগে কিছু অসাধু ব্যক্তি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে পদ্মা নদীতে যাত্রী পারাপার করছেন। এতে দুর্ঘটনার শঙ্কা থাকলেও নৌ পুলিশের তেমন তৎপরতা নেই।
আজ শুক্রবার সকালে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কয়েকজন ঝুঁকি নিয়ে ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে যাত্রী পারাপার করছেন। ঘাট এলাকায় নৌ পুলিশের সদস্যদের দেখা যায়নি। গত কয়েক দিনও এ চিত্র দেখা গেছে। ঘন কুয়াশায় ফেরি বন্ধের সময় ট্রলারে অহরহ যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে।
আজ সকালে নদী পাড়ি দিতে দৌলতদিয়া ঘাটে অপেক্ষায় ছিলেন আবদুল কাদের নামের এক ব্যক্তি। তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী। কাদের বলেন, ফেরি বন্ধ থাকায় চাকরি বাঁচাতে ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে নদী পাড়ি দেবেন। অনেকেই ১০০-২০০ টাকা ভাড়ায় ট্রলারে নদী পাড়ি দিচ্ছেন।
রাজবাড়ী সদর থেকে আসা লিটন চৌধুরী নামের আরেক ব্যক্তি জানান, রাজধানীতে তাঁর একটি সিনেমায় শুটিংয়ের কাজ আছে। বেলা সাড়ে ১১টায় সেখানে পৌঁছানোর কথা। তারপরও ফেরিতে বসে আছেন। অনেকে উপায় না পেয়ে ট্রলারে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। এভাবে ট্রলারে নদী পাড়ি দেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ বলে তিনি ঘাটেই অপেক্ষা করছেন।
দুর্ঘটনার আশঙ্কা করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এ কে এম কাজল নামের এক যাত্রী বলেন, যেভাবে মানুষ ট্রলারে পার হচ্ছেন, এতে যেকোনো মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে এমনটি হচ্ছে। এ বিষয়ে ঘাট কর্তৃপক্ষকে জোরালোভাবে দেখা দরকার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আলমগীর শেখ নামের এক ট্রলারচালক বলেন, ‘পাটুরিয়া ঘাটে বসে আছিলাম। যাত্রীদের অনুরোধে কয়েকজনকে নিয়া আইতে বাইধ্য হইছি। অনেক কুয়াশা থাহায় নদী পাড়ি দিতে সময় লাগছে। তবে আর কোনো সমস্যা হয়নি।’
বিষয়টির সম্পর্কে অবগত আছেন জানিয়ে বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন বলেন, কুয়াশায় ফেরি বন্ধ থাকলেও মাঝেমধ্যে ট্রলার ভিড়িয়ে যাত্রী ওঠা-নামা করতে দেখা যায়। এতে ফেরির ধাক্কায় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা আছে। স্থানীয় নৌ পুলিশকে এ বিষয়ে একাধিকবার জানানো হয়েছে।
পুলিশ বলছে ভিন্ন কথা। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাটির দাবি, অভিযানের আগেই পালিয়ে যান ট্রলারচালকেরা। দৌলতদিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক এনামুল হক বলেন, ‘কুয়াশায় ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে যাত্রী পারাপারে নিষেধাজ্ঞা আছে। এরপরও যাত্রী পারাপারের কথা শুনে গত সপ্তাহে একাধিক অভিযান চালিয়েছি। পুলিশ পৌঁছানোর আগেই ওরা সটকে পড়েন। জড়িত ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’