যাত্রীরা যাতে সঠিক দামে উন্নত সেবা পায়: বিমানমন্ত্রী
উড়োজাহাজের টিকিটের বাড়তি দাম নিয়ে যে সমস্যা, তার সমাধানে সবাইকে নিয়ে আলোচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান। তিনি বলেন, দেশে উড়োজাহাজের টিকিটের দাম নির্ধারণে যেসব সমস্যার কথা বলা হচ্ছে, এগুলো আলোচনা করে সমাধান করা হবে। যাত্রীরা যাতে সঠিক দামে উন্নত সেবা পায়।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে বেসরকারি এয়ারলাইনস ইউএস–বাংলা আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশের মানুষের সেবা করাই সরকারের প্রধান উদ্দেশ্য। বিমান পরিবহন খাতের সমস্যা সমাধানে আলোচনা করা হবে। কিছু সমস্যার সমাধানও করা হয়েছে। উন্নয়ন চলছে, এখনো অনেক কাজ বাকি।
ওই অনুষ্ঠানে ঢাকা থেকে সৌদি আরবের জেদ্দায় বেসরকারি এয়ারলাইনস ইউএস–বাংলার সরাসরি ফ্লাইট চালুর উদ্বোধন ঘোষণা করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী। আজ থেকে জেদ্দায় এ ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করেছে ইউএস–বাংলা। প্রতিদিন বিকেল সোয়া পাঁচটায় ঢাকা ছেড়ে যাবে এটি। আর জেদ্দা থেকে রাত ১১টা ১০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে রওনা করবে।
অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার কমোডর সাদিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, স্বাচ্ছন্দ্যে যাত্রী পরিবহন করতে সব এয়ারলাইনসকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।
এর আগে বক্তারা বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয় ও বেবিচকের কাছে বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন। এভিয়েশনবিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, ১০ বছর চালু থাকার পরও জিএমজি এয়ারলাইনস বন্ধ হয়ে গেছে। দেশে এয়ারলাইনস ব্যবসায় নানা প্রতিবন্ধকতা আছে। কলকাতার চেয়ে ঢাকা বিমানবন্দরে প্রতি লিটার জ্বালানি তেলের দাম ২২ টাকা বেশি। যন্ত্রাংশ আমদানিতে করও বেশি এখানে।
নভো এয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মফিজুর রহমান বলেন, সরকারের নীতি ব্যবসাবান্ধব নয়। বেসরকারি বিমান পরিবহন খাত টিকিয়ে রাখার জন্য এক যুগ ধরে নিয়মিত দাবি জানিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না। সবাই টিকিটের বাড়তি দাম নিয়ে অভিযোগ করেন। অথচ টিকিটের দাম থেকে ৩৮ শতাংশ চলে যায় সরকারের বিভিন্ন কর হিসাবে। করের বাইরে জ্বালানি তেলে ৩০ শতাংশ মুনাফা করে বিপিসি। এভাবে এয়ারলাইনস ব্যবসায় টিকে থাকা সম্ভব নয়।
হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন বলেন, বিমান পরিবহন খাতে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ, ভাড়া বেশি। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ যদি কম হয়, ভাড়া তো বেশি হবেই। বাজার অনেক বড়, এয়ারলাইনস কম। ফ্লাইট বাড়লে ভাড়া কমবে।
উড়োজাহাজের টিকিট বিক্রির সঙ্গে জড়িত ট্রাভেল এজেন্সি মালিকদের সংগঠন আটাবের সভাপতি আবদুস সালাম আরেফ বলেন, এক দশকে যাত্রীসংখ্যা ১০ গুণ বেড়েছে। সামনে এটি আরও বাড়বে। বিমান পরিবহন খাতের বাজারের ৭০ থেকে ৭২ শতাংশ বিদেশি এয়ারলাইনসের দখলে। এ বাজার দেশীয় এয়ারলাইনস যতটা দখল করবে, দেশের টাকা ততই দেশে থাকবে।
অনুষ্ঠানে ইউএস–বাংলার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুনসহ বিমান পরিবহন খাতে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এতে জানানো হয়, ২০১৪ সালে যাত্রা শুরু করা ইউএস–বাংলা এয়ারলাইনসের বহরে এখন ২৪টি এয়ারক্রাফট রয়েছে। দেশের মধ্যে বিভিন্ন রুটের পাশাপাশি ১৩টি আন্তর্জাতিক গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনা করছে তারা।