বরিশালে নাগরিক কমিটির সভায় হামলা
জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংবাদ সম্মেলন
বরিশাল জাতীয় নাগরিক কমিটির বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। সোমবার বিকেলে বরিশাল প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তাঁরা।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বলেন, কৃষক দল ও যুবদলের নেতা-কর্মীরা দলীয় স্লোগান দিয়ে এ হামলা করেছে। সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বরিশাল মহানগর কমিটির আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম ও সমন্বয়ক ইসরাত জাহান বক্তব্য দেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ইসরাত বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আমরা আশা করেছিলাম দেশের মানুষের বাক্স্বাধীনতার ওপর আর আঘাত আসবে না। মৌলিক অধিকার আর কখনো হরণের অপচেষ্টা হবে না। আক্রমণ আসবে না। দেশের মানুষ দল কিংবা ব্যক্তিগত মতামত নির্বিঘ্নে প্রকাশ করতে পারবে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, মহান বিজয় দিবসের দিনে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের মতোই বিএনপি নামধারী কতিপয় সন্ত্রাসী জাতীয় নাগরিক কমিটির আলোচনা সভায় ন্যক্কারজনক হামলার চালিয়ে তা পণ্ড করে দিয়েছে। আমরা এই নারকীয় হামলার তীব্র নিন্দা জানাই।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ছাত্র-জনতার রক্ত ও জীবনের বিনিময়ে যে বিপ্লব সফল হয়েছে, সেটা ভূলুণ্ঠিত করার অপচেষ্টা চলছে। নতুন করে ফ্যাসিবাদী ও সন্ত্রাসী ব্যবস্থা যারা কায়েম করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে, তাদের ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করবে। এই ঘৃণ্য অপচেষ্টা ছাত্র-জনতা যেকোনোভাবে রুখে দেবে।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব মাহমুদা মিতু উপস্থিত ছিলেন। তিনি মারধরে আহত হয়েছেন। তিনি বলেন, নগরের সোহেল চত্বরে জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। তখন কয়েকজন লোক এসে সভাস্থল ঘুরে যান। পরে তাঁরা এসে সভা করতে নিষেধ করেন। পুলিশের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে সভা করছেন জানালেও বিএনপির স্লোগান দিয়ে এ হামলা করা হয়েছে। এ ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
হামলাকারীদের মধ্যে শুধু যুবদলের কর্মী আখতারুজ্জামান নামের একজনকে চিনতে পেরেছেন জানিয়ে মাহমুদা মিতু বলেন, ‘বিএনপি নেতাদের সঙ্গেও আমাদের এ ব্যাপারে কথা হয়েছে। তাঁদের কাছে হামলাকারীদের সংগঠন থেকে বহিষ্কারের দাবি জানানো হয়েছে।’
বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব জিয়াউদ্দিন সিকদার জিয়া বলেন, কী ঘটেছে বিস্তারিত না জেনে কোনো মন্তব্য করতে পারব না।
এর আগে সোমবার সকালে বরিশাল নগরের সদর রোডে বিবির পুকুরের দক্ষিণ পাড়ে মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে জাতীয় নাগরিক কমিটি আলোচনা সভা আয়োজন করে। এতে যুবদল ও কৃষক দলের নেতা-কর্মীরা আকস্মিক হামলা চালান। এতে পণ্ড হয়ে যায় আলোচনা সভাটি। এ সময় সভাস্থলের চেয়ার ভাঙচুর ও সংগঠনের কয়েকজন নেতা-কর্মীকে মারধর করা হয়।
অভিযোগের বিষয়ে মহানগর কৃষক দলের সদস্যসচিব সাঈদ তালুকদার বলেন, ‘আমরা সেখান দিয়ে যাওয়ার সময় আলোচনা সভা থেকে স্লোগান দেওয়া হচ্ছিল, “আওয়ামী লীগ সরকার, বারবার দরকার”। এমন স্লোগান শুনে আমাদের কর্মীরা কিছুটা উত্তেজিত হয়ে সামান্য অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে আমরা তাঁদের নির্বৃত্ত করেছি। এখানে বড় কিছু হয়নি।’
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান সোমবার সন্ধ্যায় বলেন, জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে থানায় লিখিত একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।