কুমিল্লায় বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে
কুমিল্লায় গোমতী নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে বন্যাকবলিত এলাকাগুলো থেকেও একটু একটু করে পানি নামতে শুরু করেছে। এভাবে পানি কমলে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আসতে অন্তত সপ্তাহখানেক বা তারও বেশি সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, গোমতী নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যেটা দুই দিন আগে ১৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বুড়িচং উপজেলার বিভিন্ন বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষ জন্য জানিয়েছেন আজ সোমবার অন্তত এক থেকে দুই ইঞ্চি পানি কমেছে। কোথাও কোথাও পানি কমেছে পাঁচ ইঞ্চি পর্যন্ত।
সরেজমিনে ঘুরে বুড়িচং উপজেলার ভরাসার, ইছাপুর, মহিষমারা ও বাকশিমুল এলাকায় পানি কিছুটা কমেছে। তবে অন্যান্য এলাকায় পানি স্থিতিশীল রয়েছে। আদর্শ সদর উপজেলার শিমড়া, বলেশ্বর রামপুর, ভুবনঘর এলাকার মানুষ জানিয়েছেন, আগামী দিন দুয়েক আরও একটু নিচের দিকে নামবে পানি। তবে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আসতে সপ্তাহখানেক সময় লাগবে।
পানি কমলেও স্বস্তিতে নেই বন্যাকবলিত এলাকার মানুষজন। গত কয়েক দিনে সড়কের অবকাঠামো নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি বন্যাপরবর্তী বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার আশঙ্কা করছেন দুর্গত মানুষেরা। পানিবন্দী অবস্থায় দিন কাটালেও এখনো অনেক মানুষ ত্রাণসহায়তা পাননি।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কাদঘর গ্রামের বাসিন্দা তৌহিদুল ইসলাম জানান, পানি কমেছে তিন থেকে পাঁচ ইঞ্চি পরিমাণ। তবে এভাবে এত আস্তে আস্তে পানি কমলে দুর্ভোগ আরও বেড়ে যাবে। তাঁদের গ্রামসহ আশপাশের গ্রামে এখনো পর্যাপ্ত ত্রাণ পৌঁছায়নি। যাঁরা পাচ্ছেন, তাঁরা একাধিকবার ত্রাণ পান। কিন্তু যাঁরা একবারে পাননি, তাঁদের কাছে কেউ আসে না।
বুড়িচং উপজেলার ভরাসার এলাকার ব্যবসায়ী ফয়সাল হোসেন বলেন, পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে। তবে সেটা উল্লেখযোগ্য নয়, জমির ফসলে যেভাবে পানি আটকে আছে, বাড়িতে যেভাবে পানি আটকে আছে, অন্তত এক সপ্তাহ থেকে ১০ দিন সময় লাগবে সেই পানি সরতে।
কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবদুল লতিফ জানান, গোমতী নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত প্রবাহিত হয়েছিল। তবে সোমবার ৫৩ সেন্টিমিটারে চলে এসেছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, পানি আস্তে আস্তে নামতে শুরু করেছে। যদি বৃষ্টি হয়, তাহলে বিপদ।
এদিকে মনোহরগঞ্জ উপজেলায় সকাল থেকে বৃষ্টি হওয়ায় চিন্তিত হয়ে পড়েছেন উপজেলার সাধারণ মানুষ। গেল এক সপ্তাহ ধরে উপজেলায় এলাকায় পানিবন্দী রয়েছেন হাজারো পরিবার। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উজালা রানী চাকমা বলেন, সকাল থেকে এই উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চলছিল। এর মধ্যে প্রবল বর্ষণ হয়।
এদিকে নাঙ্গলকোট ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলার উপজেলার বন্যার পানি এখনো আগের মতোই আছে। পানি সরে না যাওয়ায় দীর্ঘস্থায়ী দুর্ভোগে পড়েছেন উপজেলার সাধারণ মানুষ। নাঙ্গলকোটের করপাটি গ্রামের বাসিন্দা নাঈমুর রহমান জানান, পানি কিছুটা কমেছে তবে সেটা পরিমাণে খুবই কম। এখনো হাজারো মানুষ পানিবন্দী।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মুশফিকুর রহিম বলেন, যেখান থেকে যে তথ্য পাচ্ছেন, সেভাবে বন্যাদুর্গতদের মধে৵ ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।