ময়মনসিংহে বাবা-ছেলে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দুই আসামি এক দিনের রিমান্ডে
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলায় বাবা-ছেলেকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দুই আসামির এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ বুধবার দুপুরে ময়মনসিংহ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক শাহাদাত হোসেন শুনানি শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ডে নেওয়া দুই আসামি হলেন মোজাম্মেল হোসেন (৪৫) ও মো. রিপন (৩২)। গত ১৪ এপ্রিল মামলার ১৮ নম্বর আসামি মোজাম্মেল হোসেন ও ১৯ নম্বর আসামি মো. রিপনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এ দুজন আসামির সঙ্গে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। পরে তাকে গাজীপুরের কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে।
আদালতটির পুলিশ পরিদর্শক মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গ্রেপ্তার দুই আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের কাছে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। পরে আদালত এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
গত রোববার দুপুরে ফুলবাড়িয়া উপজেলার নাওগাঁও ইউনিয়নের নাওগাঁও পশ্চিমপাড়া গ্রামে আবদুল গফুর ও তাঁর ১৫ বছর বয়সী কিশোর ছেলে মেহেদী হাসানকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গফুরের চাচাতো ভাই নাওগাঁও ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান জড়িত বলে নিহত দুজনের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। এ ঘটনায় নিহত গফুরের দ্বিতীয় স্ত্রী শিল্পী আক্তার বাদী হয়ে গত রোববার রাতে ফুলবাড়িয়া থানায় ২২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৬০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
ফুলবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রোকনুজ্জামান বলেন, হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার তিন আসামির মধ্যে দুজনকে এক দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।
পুলিশ জানায়, আবদুল গফুরের প্রতিবেশী প্রবাসী রাশেদ কিছুদিন আগে দেশে আসেন। কয়েক দিন আগে তাঁর ঘর থেকে কিছু কাগজ ও একটি মুঠোফোন চুরি হয়। এ ঘটনায় আবদুল গফুরের ছেলে মেহেদী হাসানকে অভিযুক্ত করে ১৩ এপ্রিল বেলা ১১টার দিকে সালিস বসানো হয়। রাশেদের বাড়ির সামনে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য মঞ্জুরুল হকের নেতৃত্বে সালিসটি বসে। কিন্তু চুরির সঙ্গে মেহেদী জড়িত নন দাবি করে সালিসে যাননি বাবা-ছেলে।
স্থানীয় লোকজনের বরাত দিয়ে পুলিশ বলছে, সালিস বসার পর সেখান থেকে লোকজন গিয়ে আবদুল গফুরকে তাঁর ছেলেকে নিয়ে হাজির হতে বলেন। কিন্তু সালিসের ডাকে হাজির না হওয়ায় সেখানে থাকা লোকজন আবদুল গফুরের বাড়িতে গেলে বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়। এর জেরে আবদুল গফুরের বাড়িতে ভাঙচুর চালানো শুরু করেন সালিসের লোকজন। এ সময় আবদুল গফুর ও তাঁর ছেলেকে রড দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে ঘটনাস্থলেই হত্যা করা হয়। খবর পেয়ে ফুলবাড়িয়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। সেখান থেকে বাবা-ছেলের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেওয়া হয়।