জাতীয় সংসদ ও দল থেকে পদত্যাগের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য মনোনয়নপত্র কিনেছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। আজ রোববার বিকেলে আবদুর রশিদ নামের এক ব্যক্তি তাঁর পক্ষে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন বলে জানান জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান। আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার ছেলে মাঈনুল হাসান প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন। তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। দলীয় সিদ্ধান্তে গত ১১ ডিসেম্বর তিনি জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি এ আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি মোট পাঁচবার (১৫ ফেব্রুয়ারিসহ) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। একবার প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লস্কর প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা শুনেছি, তিনি নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র কিনেছেন। তিনি যদি স্বতন্ত্র কিংবা অন্য কোনো দলের হয়ে উপনির্বাচনে অংশ নেন, তবে মীরজাফরের কাজটি করবেন। আমরা এ সরকারকে মানি না বলেই দলীয় সিদ্ধান্তে দলীয় এমপিরা পদত্যাগ করেছেন। দল তাঁকে অনেক দিয়েছে। তাঁকে টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী পর্যন্ত করেছে। এখন তিনি নির্বাচন করলে বিএনপি বা সমমনা কোনো দলই তাঁকে মেনে নেবে না। আমরা তাঁকে বর্জন করব।’
উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনিছুল ইসলাম ঠাকুর প্রথম আলোকে বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনটি বিএনপি তথা ধানের শীষের ঘাঁটি। এটি কোনো ব্যক্তির নয়। তিনি এখন নির্বাচন করলে বিএনপির কোনো নেতা-কর্মী বা সমর্থক তাঁকে মেনে নেবে না।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘তাঁর মনোনয়নপত্র নেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। তিনি যদি এখন নির্বাচন করেনই, তবে তাঁকে জেলায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে।’
সরাইল বিকাল বাজারের ব্যবসায়ী উজ্জ্বল মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ভোট দিই ধানের শীষকে, কোনো ব্যক্তিকে নয়। এখন তিনি বিএনপির কেউ নন। তাঁকে আমরা ভোট দেব না।’
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার মুঠোফোনে ফোন করা হলে তাঁর ছেলে মাঈনুল হাসান ভূঁইয়া বলেন, ‘আমাদের এক আত্মীয় মনোনয়নপত্র তুলেছেন। মনোনয়নপত্র তোলা মানেই নির্বাচন করা নয়। আমরা বসে সিদ্ধান্ত নেব কী করা যায়। তবে নির্বাচন করার মতো কোনো সিদ্ধান্ত এখনো আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়নি।’
এ বিষয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও এ আসনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. জিল্লুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, রোববার বিকেল চারটার দিকে মোহাম্মদ রশদি নামের এক ব্যক্তি আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার নামে মনোনয়নপত্র কিনে নেন। তিনি সাবেক সংসদ সদস্যের ফুফা হন বলে পরিচয় দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত আবদুস সাত্তারসহ মোট সাতজন মনোনয়নপত্র নিয়েছেন।