পঞ্চগড়ের চায়ের মেইন সমস্যা কোয়ালিটি: চা বোর্ডের চেয়ারম্যান

পঞ্চগড়ে চা–শিল্প নিয়ে এক প্রশিক্ষণ ও মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন। রোববার দুপুরে চা বোর্ডের পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয়েছবি: প্রথম আলো

বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন বলেছেন, ‘চা–শিল্পে একেক জায়গায় একেক ধরনের প্রবলেম (সমস্যা) আমরা পাচ্ছি। পঞ্চগড়ের চায়ের মেইন সমস্যা কোয়ালিটি (গুণগত মান)। এটা কেউ অ্যাকসেপ্ট করুক বা না করুক, কোয়ালিটিটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে পঞ্চগড়ের চায়ের মার্কেটিং করার ব্যাপারে। পঞ্চগড়ের চা-কে উন্নত করতে হলে বা চাষিদের যদি সত্যিই উন্নতি করতে হয়, তাহলে প্রথমে তাঁদের কোয়ালিটিতে উন্নয়ন করতে হবে।’

রোববার দুপুরে চা বোর্ডের পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয়ে ‘উত্তরাঞ্চলের চা–বাগান ও ক্ষুদ্র চাষিদের চা আবাদ সম্প্রসারণ এবং চায়ের গুণগত মান উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ ও মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে শেখ মো. সরওয়ার হোসেন এ কথা বলেন।

চা বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, ‘পঞ্চগড়ে চা প্রোডাকশনের জন্য যে পাতাটা দরকার, সেই পাতা এখানকার চাষিদের জ্ঞানের অভাবের জন্য তাঁরা কালেক্ট করছেন না। এতেই চায়ের কোয়ালিটিটা কম্প্রোমাইজ হচ্ছে বেশি।’ চা–পাতার ন্যায্যমূল্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘চাষিদের ন্যায্যমূল্য পাওয়া উচিত। চাষিরা যদি কোয়ালিটি পাতা দেন, তাহলে অবশ্যই এখন যে দাম আছে, এর চেয়ে বেশি পাবেন। তাঁদের ন্যায্যমূল্য পেতে হলে এখানে সিন্ডিকেটের কোনো ইমপ্যাক্ট থাকলে সেটা প্রতিরোধ করতে হবে এবং কারখানার মালিকদের বোঝাতে হবে, তাঁরা যেন ন্যায্যমূল্য প্রদান করেন। এই তিন স্টেকহোল্ডার যদি আমরা ঠিক করতে পারি, তাহলে ওভারঅল চা সেক্টরটা ভালো হবে।’

পঞ্চগড়ের চা-শিল্পে সিন্ডিকেট থাকলে খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়ে মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন বলেন, ‘যদি কোনো সিন্ডিকেট এখানে ফাংশনাল থাকে, তাহলে সিন্ডিকেটগুলোর কার্যক্রম কীভাবে প্রতিহত করা যায়, সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ আমরা নেব। এ ছাড়া এ রকম কিছু থাকলে নিয়মকানুনের ভেতরে কারখানাগুলোকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেব।’

চা বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, ‘আন্ডারগ্রাউন্ডে (নিলামবহির্ভূত) চা বিক্রির একটা বদনাম এই এলাকার কারখানাগুলোর আছে। এটা আমি অস্বীকার করব না। এটা বন্ধ করার জন্য আমি অলরেডি বিভিন্ন ফ্যাক্টরিতে মনিটরিং বাড়াব। এ ছাড়া স্থানীয় লোকজনকেও বলেছি যে তাঁদের কাছে যদি আন্ডারগ্রাউন্ডে কোনো চা বিক্রির ইনফরমেশন থাকে, তাহলে আমাদের দেবেন। আমরা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে তাঁদের প্রতিহত করার চেষ্টা করব। তবে এখানে কমপিটিশন ক্রিয়েট করতে হবে। যদি মনোপলি হয়ে যায় কোনো ফ্যাক্টরিতে, তাহলে বাকি নিয়মকানুন তারা গ্রাহ্য করতে চায় না। এ জন্য মনোপলিটাও ভাঙতে হবে।’

মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন বলেন, ক্ষুদ্র কারখানার বিষয়ে চাষিদের মধ্য থেকে প্রয়োজনীয়তার কথা উপস্থাপন করেছেন। তিনি চেষ্টা করবেন নিয়মনীতির ভেতরে থেকে কীভাবে এটাকে ফ্যাসিলিটেট করা যায়। তিনি মনে করেন, যদি নিয়মনীতির ভেতরে থেকে এটা করা যায়, তাহলে চাষিরা উপকৃত হবেন এবং দেশও উপকৃত হবে।

এ সময় বাংলাদেশ চা বোর্ডের সদস্য (অর্থ ও বাণিজ্য) যুগ্ম সচিব ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি, উপসচিব মোছাম্মৎ সাবিনা ইয়াছমিন, পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবিরসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।