সেই শিশু ও তার নিহত মায়ের পরিচয় শনাক্ত

সড়ক দুর্ঘটনায় মায়ের মৃত্যু হলেও শিশুটি অক্ষত ছিল। শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয় পুলিশ। প্রাথমিকভাবে মেয়েটির পরিচয় জানা যায়নি। পরে জানা যায় মেয়েটির নাম তাসনিয়াছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের টঙ্গীর স্টেশন রোডে বিআরটির উড়ালসড়কে বাসচাপায় নিহত নারী ও ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া শিশুটির পরিচয় মিলেছে। এ ঘটনা নিয়ে প্রথম আলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে আজ শনিবার সকালে টঙ্গী পূর্ব থানায় যোগাযোগ করেন নিহত নারীর স্বজনেরা। আইনি প্রক্রিয়া শেষে স্বজনদের কাছে ওই নারীর লাশ ও বেঁচে যাওয়া শিশুটিকে হস্তান্তর করবে পুলিশ।

গতকাল শুক্রবার ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট থেকে একটি বাসে করে গাজীপুরের টঙ্গী ফিরছিলেন ওই নারী। সঙ্গে ছিল তাঁর এক বছরের কন্যাশিশু। গতকাল সকালে বাস থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের স্টেশন রোড এলাকায় বিআরটির (বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট প্রকল্প) উড়ালসড়কের ওপর মা-মেয়েকে নামিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় পেছন থেকে আসা গাড়ির চাপায় নিহত হন ওই নারী। মায়ের ছিন্নভিন্ন লাশের পাশেই কাঁদছিল মেয়েটি। পরে পুলিশ এসে শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। আর নিহত নারীর লাশ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। পরে গতকাল আর নিহত নারীর পরিচয় মেলেনি। এ ঘটনায় শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রথম আলো অনলাইনে ‘সড়কে মায়ের ছিন্নভিন্ন মরদেহের পাশে পড়ে ছিল শিশুটি’ শিরোনামে ছবিসহ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর সেই সংবাদের সূত্র ধরে আজ শনিবার সকালে নিহত নারীর স্বজনদের সন্ধান পাওয়া গেছে।

পুলিশ জানায়, নিহত নারীর নাম মোসাম্মত তাসলিমা। আর বেঁচে যাওয়া তাঁর মেয়েটির নাম তাসনিয়া। নিহত তাসলিমার গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর বাদুয়ারচর এলাকায়। তাঁর স্বামী মো. শামীমের সঙ্গে বেশ কিছুদিন ধরে পারিবারিক ঝামেলা চলছিল। ১০ দিন আগে তাসলিমা মেয়েকে নিয়ে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট বোনের বাড়িতে বেড়াতে যান। গতকাল ফেরার পথে এই দুর্ঘটনার শিকার হন।

টঙ্গী পূর্ব থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মোস্তফা কামাল বলেন, ঘটনার পর থেকে বিভিন্নভাবে তাঁদের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করা হচ্ছিল। কিন্তু কোনোভাবেই পরিচয় পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে শিশুটিকে শিশু সুরক্ষা কেন্দ্রে পাঠানো হয়। আর তাসলিমার লাশ মর্গে রাখা হয়। এরই মধ্যে শনিবার সকালে শিশুটির নানা, মামা ও খালাসহ চার-পাঁচজন স্বজন থানায় আসেন। তাঁরা জানান, প্রথম আলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখে তাঁরা থানায় এসেছেন।

আরও পড়ুন

মোস্তফা কামাল আরও বলেন, শেষ পর্যন্ত পরিচয় শনাক্ত না হলে মেয়েশিশুটির ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়ে খুব চিন্তিত ছিলেন। এখন পরিচয় পাওয়ায় স্বস্তি পেয়েছেন। শিশুটিকে বুঝে নিতে স্বজনদের সমাজসেবা কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে শিশুটি ও নারীর লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

আরও পড়ুন