লাখ টাকায় বিক্রি দেড় বছরের ছেলেকে উদ্ধার, বাবাসহ গ্রেপ্তার ৪
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলায় লাখ টাকায় দেড় বছর বয়সী ছেলেকে বিক্রির অভিযোগে বাবাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত সোমবার রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে নরসিংদী থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে। পরে বিক্রি হওয়া শিশুটিকে উদ্ধার করে মায়ের কাছে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার চারজন হলেন শিশুটির বাবা জামালগঞ্জ উপজেলার সালে নুর (৩০), শান্তিগঞ্জ উপজেলার বাবনিয়া গ্রামের মনফর আলী (৪৫), জগন্নাথপুর উপজেলার কাজিরগাঁও গ্রামের রমাই মিয়া (৫৫) ও নরসিংদীর লাকী আক্তার (৩৮)। লাকী বর্তমানে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার খেজাউরা হাছননগর এলাকায় ভাড়া থাকেন।
শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালেদ চৌধুরী বলেন, পারিবারিক বিষয় নিয়ে সালে নুর ও তাঁর স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। দ্বন্দ্বের জেরে স্ত্রীসহ দুই ছেলেকে শান্তিগঞ্জে শ্বশুরবাড়ি পাঠিয়ে দেন। মাসখানেক আগে শান্তিগঞ্জে এসে মায়ের অসুস্থতার কথা বলে দুই ছেলেকে আবার বাড়িতে নিয়ে যান সালে নুর। কিছুদিন পর আবার সালে নুর শ্বশুরবাড়ি এলে তাঁর স্ত্রী ছেলেদের খোঁজ করেন। তখন সালে নুর বলেন, ছেলেরা দাদির সঙ্গে ঢাকায় গেছে। মুঠোফোনে ওই নারী ঢাকায় তাঁর শাশুড়ির সঙ্গে কথা বলেন। শাশুড়ি বলেন, তাঁর সঙ্গে শুধু বড় ছেলে আছে। এ সময় স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের চাপের মুখে দেড় বছর বয়সী ছেলেকে এক লাখ টাকায় বিক্রি করে দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন সালে নুর।
এই ঘটনায় ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে গত রোববার শান্তিগঞ্জ থানায় স্বামী সালে নুরসহ কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন। পরে সোমবার রাতে পুলিশ জেলার বিভিন্ন এলাকা ও নরসিংদীতে অভিযান চালিয়ে সালে নুরসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
সুনামগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (শান্তিগঞ্জ ও জগন্নাথপুর সার্কেল) সুভাশীষ ধর বলেন, নুর মূলত বেকার। টাকার জন্যই তিনি এই কাজ করেছেন। শিশুটিকে নরসিংদী থেকে উদ্ধার করে তার মায়ের কাছে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত গ্রেপ্তার চারজনকে গতকাল মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।