ব্যবসার কাজে আজ রোববার সকালে ঢাকা রওনা হয়েছিলেন ফরহাদ শিকদার (৫০)। মেয়ে সাথী আক্তারকে (২৮) ডেকে বলে গিয়েছিলেন দুপুরে ফিরে একসঙ্গে খাবার খাবেন। কিন্তু সেই খাওয়া আর হলো না ফরহাদের। সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন তিনি।
বাবা মারা যাওয়ার খবর পেয়ে বেলা একটায় মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন ফরহাদ শিকদারের একমাত্র মেয়ে সাথী আক্তার। আহাজারি করতে করতে তিনি বলেন, ‘আব্বায় কইছিল দুপুরে ভাত রান্না করতে, একসঙ্গে আইয়া ভাত খাইব। সেই খাওন আর হইল না। আইজ আমরা সর্বহারা হইয়া গেলাম। আল্লাহ তুমি আমাগো এতিম বানাইয়া দিলা। আমাগো বট গাছটা আজ চইলা গেল। আম্মারে বাড়িতে ফিরা কি জবাব দিমু? আল্লা তুমি এইডা কি করলা।’
নিহত ফরহাদ শিকদার নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার চরকরকী এলাকার মৃত ফকু শিকদারের ছেলে। এই দুর্ঘটনায় ফরহাদ শিকদারসহ ১৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন। ফরহাদের মেয়ের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আজ ভোর পাঁচটায় ফরহাদ নড়াইল থেকে ইমাদ পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে ঢাকায় যাচ্ছিলেন। তাঁর এক ছেলে সৌদিপ্রবাসী ও দুই মেয়ে রয়েছে।
সাথী বলেন, ‘আব্বায় আমারে সব দিছে। আর কিছু চাই না। আম্মেরা আমার বাবার লাশটা দেন। কাটাছেঁড়া আর কইরেন না। আম্মেগো আছে আমার আর কিছু চাই না।’
পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, আজ সকাল সাড়ে সাতটার দিকে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ইমাদ পরিবহনের একটি বাস পদ্মা সেতুর আগে এক্সপ্রেসওয়ের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। এ সময় দুমড়েমুচড়ে যায় বাসটি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দুজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার পথে মারা যান। ঢাকা মেডিকেলে আরও ১০ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ছাড়া আহত আরও ২৫ জন শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন।