ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন আবু তৈয়ব মো. আজমুল হক পাটোয়ারী। ছাত্রজীবন থেকে বাম রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। আন্দোলন-সংগ্রাম করতে গিয়ে জেলও খেটেছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি লালমনিরহাট-৩ (সদর) আসনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ, ইনু) হয়ে মশাল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। নির্বাচনের ভোট গ্রহণের আর মাত্র পাঁচ দিন বাকি। এখন প্রার্থী হয়েও নিজের বক্তব্য নিজ কণ্ঠে রেকর্ড করে অটোরিকশা নিয়ে প্রচার করছেন আজমুল হক পাটোয়ারী।
আজমুল হক পাটোয়ারী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার যা বলার আছে, দরকার মনে করেছি, তা স্বকণ্ঠে রেকর্ড করে নির্বাচনী মাইকিংয়ে প্রতিদিন প্রচার করছি। মানুষজন আমার বক্তব্য শুনছেন। অনেকে আমার নির্বাচনী প্রচারের অটোরিকশার কাছে এসে আমাকে দেখতে পেয়ে অবাক হয়ে যান। আমার সঙ্গে কথা বলেন। এতে আমি সমাজ পরিবর্তনের জন্য কাজ করতে সাহস পাই।’
লালমনিরহাট-৩ আসনে মোট সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। জাসদের আজমুল হক পাটোয়ারী ছাড়াও অন্য প্রার্থীরা হলেন সাম্যবাদী দলের আশরাফুল আলম, আওয়ামী লীগের মো. মতিয়ার রহমান, আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. জাবেদ হোসেন, জাতীয় পার্টির মো. জাহিদ হাসান, তৃণমূল বিএনপির শামীম আহমেদ চৌধুরী, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির হরিশ চন্দ্র রায়। তাঁরা সবাই শেষ মুহূর্তেই প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। তাঁদের মধ্যে ব্যতিক্রম জাসদের আজমুল হক।
নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে জাসদের এই প্রার্থী বলেন, ‘আপাতত কেন্দ্র থেকে কিছু অর্থসহায়তা ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছ থেকে কিছু অনুদান পেয়েছি। একজন শুভাকাঙ্ক্ষী ব্যবসায়ী ১০ হাজার ছোট পোস্টার দিয়েছেন; কয়েক হাজার বড় পোস্টারও পেয়েছি। ২৭ ডিসেম্বর থেকে স্বকণ্ঠে ধারণ করা বক্তব্য মাইকিং করছি। কয়েকটি অটোরিকশা ও রিকশায় আমার প্রচারণা চলছে। নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী আমি কাজ করছি।’
নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে চিন্তিত নন আজমুল হক। তিনি বলেন, তিনি হয়তো কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে পারবেন না। তবে তিনি এলাকার ভোটারদের জানাতে চান, শুধু বড় দল নয়; ছোট দলের মানুষও তাঁদের কথা ভাবেন। বিপদে-আপদে, সুখে-দুঃখে তাঁদের পাশে থাকতে চান। নিজের সীমিত সামর্থ্য নিয়ে ভোটারদের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। সাফল্য এবার না হোক অন্য কোনো নির্বাচনে আসবে।
স্বকণ্ঠে প্রচারিত মাইকিংয়ে আজমুল হক পাটোয়ারী সাধারণ ভোটারদের বিভিন্ন বিষয়ে আকর্ষণ করছেন। গণতন্ত্রবোধের অভাবের কারণে সাধারণ মানুষ রাষ্ট্র ও রাজনীতি থেকে নিজেদের সরিয়ে নিচ্ছেন বলে প্রচার করছেন তিনি। সমৃদ্ধ লালমনিরহাট ও শক্তিশালী বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে মশাল মার্কায় ভোট চাচ্ছেন আজমুল হক। তাঁর প্রচারকাজে তিন-চারজন রাজনৈতিক সতীর্থ তাঁর সঙ্গে থাকেন।
লালমনিরহাট শহরের ব্যবসায়ী আবদুল বাতেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার কাছে এবার অনেকেই ভোট চেয়েছেন, জাসদের আজমুল হক পাটোয়ারী তাঁদের মধ্যে একজন। ভোটের ফলাফল কী হবে জানা নেই। কিন্তু আজমুল হক পাটোয়ারীর স্বকণ্ঠে ধারণ করা বক্তব্য আমি আরও অনেকের মতো মনোযোগ দিয়ে শুনেছি। বক্তব্য ভেবে দেখার মতো।’