মাদারীপুরে নিজ ঘরে নিথর পড়ে ছিল মাদ্রাসাছাত্রী শিশু, ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ
মাদারীপুরের রাজৈরে নিজ ঘর থেকে এক মাদ্রাসাছাত্রী শিশুর (১১) লাশ উদ্ধারের ঘটনায় তাকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় এক বখাটের জড়িত থাকার অভিযোগ করেছে শিশুটির পরিবার।
গতকাল শুক্রবার রাতে উপজেলার টেকেরহাট-নয়াকান্দি এলাকায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। এদিকে ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত বখাটে পলাতক রয়েছে। নিহত শিশুটি স্থানীয় একটি মাদ্রাসার তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। তার বাবা ডিম বিক্রি করে সংসার চালান।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় শিশুটির বাবা কাজে বের হন। এ সময় শিশুটিকে ঘরে রেখে এক প্রতিবেশীর বাড়িতে যান তার মা। রাত ৮টার দিকে মা ঘরের ভেতর প্রবেশ করতেই মাটিতে মেয়েকে নিথর অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। এরপরই তিনি চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন। তাঁর চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসেন। শিশুটির লাশ উদ্ধার করে আজ শনিবার দুপুরে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
স্বজনদের অভিযোগ, শিশুটির বাড়ির কাছে ৫ মাস আগে ঘর ভাড়া নেন মিরাজ হোসেন নামের এক তরুণ। এরপর প্রায়ই মেয়েটিকে উত্ত্যক্ত করতেন মিরাজ। শুক্রবার সন্ধ্যার পর বাড়ি ফাঁকা পেয়ে ঘরে প্রবেশ করেন মিরাজ। এরপর শিশুটির মুখে গামছা চেপে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি জানাজানির ভয়ে শ্বাস রোধ করে মেয়েটিকে হত্যা করে পালিয়ে যান মিরাজ। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন শিশুটির স্বজন ও এলাকাবাসী।
অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে মিরাজ হোসেনের মুঠোফোনে কল দিলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে। এদিকে অভিযুক্ত মিরাজ হোসেনকে ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে রাজৈর থানার পুলিশ।
শিক্ষার্থীর মা বলেন, ‘বেশ কয়েকবার ওই বখাটেকে নিষেধ করছি। কিন্তু আমার কথা শোনেনি। তার বন্ধুদের নিয়ে ঘরের ভেতর আড্ডাখানা বানিয়ে রেখেছিল। সেখানে মাদক সেবন করত তারা। ফাঁকা বাড়িতে একা পেয়ে আমার মেয়েকে এভাবে নির্মমভাবে হত্যা করবে বুঝতে পারি নাই। আমার মেয়েকে হত্যার সঙ্গে যে দায়ী, তার বিচার চাই আমি।’
প্রতিবেশী কুদ্দুস ব্যাপারী বলেন, ‘মেয়েটির শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। ১১ বছরের মেয়েটির ওপর যে অত্যাচার হয়েছে, সেই অত্যাচারের বিচার আমরা চাই।’
মাদারীপুরের রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিরাজ খান বলেন, ‘এই হত্যার সঙ্গে কে বা কারা জড়িত, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিহত শিশুটির ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে মেয়েটির সুরতহাল প্রতিবেদনে গুরুতর কোনো আঘাত খুঁজে পায়নি পুলিশ। তাকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করা হতে পারে। আমরা এ ঘটনাটি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছি। আশা করছি অভিযুক্ত ব্যক্তিকে দ্রুত পুলিশ ধরতে সক্ষম হবে।’