নড়াইলে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় কিশোরকে কুপিয়ে হত্যা
নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় নিলয় মোল্লা (১৫) নামে এক কিশোরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে নড়াগাতী থানার খাশিয়াল ইউনিয়নের তালবাড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় ওই কিশোরকে রক্ষা করতে এগিয়ে গিয়ে তার এক বন্ধুও আহত হয়েছে।
নিহত নিলয় মোল্লা ওই ইউনিয়নের টানা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য সুলতান আহমেদ মোল্লার ছেলে। সে টোনা দাখিল মাদ্রাসার ছাত্র ছিল। সে প্রায় দুই বছর আগে থেকে পড়ালেখা বাদ দিয়েছে বলে তার পরিবার জানায়।
নিলয়ের কয়েকজন বন্ধু ও পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, দুই সপ্তাহ আগে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করেন পাশের ব্রাক্ষ্মণপাটনা গ্রামের শাকিল খান নামের এক তরুণ। নিলয় এর প্রতিবাদ করেন। এতে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে শাকিলকে থাপ্পড় দেয় নিলয়। বিষয়টি স্থানীয় বড় ভাইয়েরা মীমাংসা করে দেন। ওই ঘটনার জের ধরে শাকিল ও তাঁর সহযোগীরা নিলয়কে কুপিয়ে হত্যা করেছেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নিলয়ের বন্ধুরা জানায়, তালবাড়িয়া গ্রামে ওয়াজ মাহফিল থেকে বাড়ি ফেরার পথে শাকিল ও তাঁর সহযোগীরা নিলয়কে প্রথমে মারধর করেন। একপর্যায়ে নিলয়ের বুকে ছুরিকাঘাত করেন। এ সময়ে ঠেকাতে গিয়ে নিলয়ের বন্ধু তামিম আহত হয়। সেখান থেকে স্থানীয় লোকজন তাদের দুজনকে উদ্ধার করে কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা নিলয়কে মৃত ঘোষণা করেন।
নিলয়ের বাবা, মা ও বোনসহ পরিবারের সদস্যরা এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক পার্থ প্রতিম বিশ্বাস বলেন, হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই নিলয়ের মৃত্যু হয়। তার বুকের বাম পাশে ধারালো ছুরির আঘাত আছে। তামিমকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
খাশিয়াল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও টোনা গ্রামের বাসিন্দা রেজ্জাক খন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুনেছি উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় শাকিল ক্ষিপ্ত ছিল। সেটার জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড।’
অভিযুক্ত শাকিল ও তাঁর সহযোগীরা ঘটনার পর থেকে পলাতক। তাদের পরিবারের কাউকেও পাওয়া যায়নি। অপর দিকে নিহত নিলয়দের বাড়িতে চলছে মাতম। তার বাবা সুলতান আহমেদ, মা লুৎফন নাহার ও বোন শারমিনসহ পরিবারের সদস্যরা এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
নড়াগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোস্তাফিজুর রহমান আজ শনিবার দুপুরে প্রথম আলোকে জানান, নড়াইল জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারও এলাকায় এসেছেন। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।