উত্তরাঞ্চলে অনির্দিষ্টকালের জন্য ডাকা পেট্রলপাম্প ধর্মঘট প্রত্যাহার

উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলার পেট্রলপাম্প ধর্মঘটে কুড়িগ্রামে বন্ধ একটি পেট্রলপাম্প। বুধবার দুপুরে শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ডাকা পেট্রলপাম্প ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ বুধবার বিকেলে বগুড়ার জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজার সঙ্গে বৈঠক শেষে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলারস, ডিস্ট্রিবিউটরস, এজেন্টস অ্যান্ড পেট্রলপাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন রাজশাহী বিভাগীয় কমিটি ধর্মঘট প্রত্যাহারের এ ঘোষণা দেয়। বৈঠক শেষে সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল বলেন, দাবি আদায়ে জেলা প্রশাসন আশ্বাস দেওয়ায় ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা বলেন, শান্তিপূর্ণ আলোচনা শেষে পেট্রলপাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

এর আগে সংগঠনের সভাপতি মিজানুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল আজ সকাল আটটা থেকে আকস্মিকভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য জ্বালানি তেল উত্তোলন ও বিপণন বন্ধ ঘোষণা করেন। বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহারে আনিকা পেট্রলপাম্পে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের প্রতিবাদে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে এ ধর্মঘট ডাকা হয়েছিল। আকস্মিক পেট্রলপাম্প বন্ধ ঘোষণা করায় বিপাকে পড়েন যানবাহনের চালকেরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার সান্তাহার পৌর শহরের হবীর মোড় এলাকায় বগুড়া-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে আনিকা পেট্রলপাম্পে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে বগুড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। পাম্পটি পেট্রলপাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিলের মালিকানাধীন। এর প্রতিবাদে আজ সকাল থেকে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে পেট্রলপাম্প অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট আহ্বান করা হয়। দুপুরে আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আফরোজ আনিকা পেট্রলপাম্প ছাড়াও হা-মীমসহ বেশ কিছু পেট্রলপাম্প পরিদর্শন করে মালিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের পেট্রলপাম্প মালিকেরা ধর্মঘট ডেকেছিলেন। অনেকে এই সময় বাড়তি দামে খোলা তেল বিক্রি করেন। বুধবার পাবনা সদরের দক্ষিণ রাঘবপুর ঢাকা রোডে
ছবি: হাসান মাহমুদ

সওজ বগুড়া সূত্র জানায়, গত ২৪ জানুয়ারি মহাসড়কের পাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে সংবাদপত্রে গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী ৪ ফেব্রুয়ারি বগুড়া-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়কের দুই পাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে সান্তাহারে আনিকা ও হা-মীম এবং পরের দিন ৫ ফেব্রুয়ারি সকালে সান্তাহার পূর্ব ঢাকা রোডে আশা পেট্রলপাম্পের অবৈধ স্থাপনা ভাঙা হয়।

সওজ বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান বলেন, পেট্রলপাম্পে জ্বালানি নিতে আসা যানবাহন চলাচলের জন্য সড়ক বিভাগের জায়গা পাম্পের মালিকেরা ইজারা নিয়ে থাকেন। কিন্তু সান্তাহারে আনিকা পেট্রলপাম্প ইজারার বদলে সওজের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে তা ব্যবহার করে আসছে। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।

পেট্রলপাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন বিভাগীয় কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, মহাসড়কের জায়গা থেকে স্থাপনা উচ্ছেদে পূর্ব নোটিশ না দিয়েই সান্তাহারে আনিকা পেট্রলপাম্পসহ আরও কয়েকটি পেট্রলপাম্পে স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে পেট্রলপাম্পের মালিকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।