সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় চাই মহাত্মা গান্ধীর অহিংস নীতির বাস্তবায়ন: ভারতীয় হাইকমিশনার
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেছেন, মানুষের মধ্যে অহিংস নীতি প্রচার ও শান্তির বাণী ছড়াতে নোয়াখালীতে এসেছিলেন মহাত্মা গান্ধী। বর্তমান বিশ্বে শান্তি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রতিষ্ঠায় চাই তাঁর অহিংস নীতির বাস্তবায়ন।
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে মহাত্মা গান্ধীর ৭৫তম প্রয়াণদিবসের আয়োজনে এসব কথা বলেন তিনি। দিনটি উপলক্ষে আজ সোমবার দুপুরে উপজেলার জয়াগ গ্রামে গান্ধী মেমোরিয়াল ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের চেয়ারম্যান জীবন কানাই দাসের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রণয় ভার্মা।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, নোয়াখালী-১ আসনের সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহিম, জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান, পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী মো. জাহাঙ্গীর আলম, নিউজ টোয়েন্টিফোর চ্যানেলের প্রধান নির্বাহী রাহুল রাহা প্রমুখ। সভার সঞ্চালনা করেন গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক রাহা নব কুমার।
প্রণয় কুমার ভার্মা বলেন, ‘হিন্দু–মুসলমানের রক্ত এক ও অভিন্ন’ এই বাণী প্রচার করেছেন মহাত্মা গান্ধী। এখন সারাবিশ্বে তাঁর অহিংসার বাণী প্রচারিত হচ্ছে।
এর আগে সকালে আমন্ত্রিত অতিথিসহ গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে গান্ধী স্মৃতি জাদুঘর প্রাঙ্গণে মহাত্মা গান্ধীর ভাস্কর্যে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা, প্রদীপ প্রজ্বলন ও সর্বধর্মীয় প্রার্থনা করা হয়। এরপর সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেন গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের শিল্পীরা।
ব্রিটিশ শাসনামলের শেষের দিকে ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থানের মতো নোয়াখালীতেও হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। সেই দুঃসময়ে নোয়াখালী ছুটে আসেন মহাত্মা গান্ধী। ১৯৪৬ সালের ৭ নভেম্বর থেকে ১৯৪৭ সালের ২ মার্চ পর্যন্ত নোয়াখালী অবস্থানকালে তিনি গ্রামে গ্রামে ঘুরে দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পুনর্বাসন, হিন্দু-মুসলিম ভ্রাতৃত্ব স্থাপনসহ সেবামূলক বিভিন্ন কাজে হাত দেন।
এভাবে ১৯৪৭ সালের সালের ২৯ জানুয়ারি নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলায় জয়াগ গ্রামে গান্ধীর আগমন ঘটে। জয়াগের তৎকালীন জমিদার হেমন্ত কুমার ঘোষ নিজ জমিদারির সব সম্পত্তি মানুষের কল্যাণে ব্যবহারের জন্য মহাত্মা গান্ধীকে দিয়ে দেন। এরপর ওই জমিদার বাড়িতে গড়ে ওঠে গান্ধী শান্তি ক্যাম্প।