যুবলীগ নেতার বাড়িতে গভীর রাতে অগ্নিকাণ্ড, মা ও চাচির মৃত্যু
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা শেখ রুমেল আহমদের বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডে তাঁর মা ও চাচির মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার মোস্তফাপুর গ্রামে বসতবাড়ির ডুপ্লেক্স ভবনে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
অগ্নিকাণ্ডে শেখ রুমেল আহমদের মা মেহেরুন্নেছা (৬৫) ও চাচি ফুলেছা বেগম ওরফে কটি বিবি (৬০) মারা গেছেন। ধোঁয়ায় শ্বাস নিতে না পেরে দুজনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
শেখ রুমেল আহমদের মামা শেখ জহির আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ফজরের আজানের পর আগুন লাগার কথা শুনেছি। কীভাবে আগুন লাগছে, জানি না। শুনছি, শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগছে।’
স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস ও প্রতিবেশী সূত্রে জানা যায়, গতকাল শনিবার রাত আড়াইটার দিকে শেখ রুমেল আহমদের বাড়ির ভবনে হঠাৎ আগুন লাগে। বাড়ির নৈশপ্রহরী ঘরের ভেতর থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে দেখে চিৎকার করতে থাকেন। চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ঘুম থেকে জেগে ওঠে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। কিন্তু ভবনের প্রধান ফটকে তালা লাগানো থাকায় তাঁরা আর ঘরে ঢুকতে পারেননি। এ সময় কেউ একজন জাতীয় জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টি জানান। খবর পেয়ে মৌলভীবাজার সদর ফায়ার স্টেশনের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে ফটকের তালা ভেঙে আগুন নেভানোর কাজ করেন।
পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘরের ভেতর থেকে অচেতন অবস্থায় দুই নারীকে উদ্ধার করে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। অগ্নিকাণ্ডের সময় ডুপ্লেক্স ভবনটিতে এই দুই নারী ছাড়া আর কেউ ছিলেন না।
এ বিষয়ে আজ সকালে প্রতিবেশী সাদিক মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, নৈশপ্রহরীর চিৎকার শুনে তিনি ঘুম থেকে জেগে ওঠেন। এরপর একজন আরেকজনকে ডেকে তুলেছেন। ঘরের বড় গেটে তালা ছিল। ফলে ভেতরে ঢোকা যায়নি। নিচতলার বসার ঘরে আগুন লেগেছে। সারা ঘরে ধোঁয়া ছড়িয়ে অন্ধকার হয়ে যায়। দরজা খুলে ঘর থেকে কেউ বের হতে পারেননি।
মৌলভীবাজার ফায়ার স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা যীশু তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, ঘরের সোফা ও ইনটিরিয়র ডিজাইনের জিনিস পুড়ে আগুন দ্রুত ওপরে ওঠে গেছে। দুই নারীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হলে কর্তব্যরত চিকিৎসত মৃত ঘোষণা করেন। ওই দুই নারী আগুনে পুড়ে নয়, ধোঁয়ায় শ্বাস নিতে না পেরে মারা গেছেন।
মৌলভীবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মাহবুবুর রহমান বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ড হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের প্রকৃত কারণ জানতে কাজ চলছে।