নেত্রকোনায় শর্ষে চাষ
ভালো ফলনে চাষি খুশি
জেলার ১০টি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি শর্ষে চাষ হয়েছে কলমাকান্দা ও পূর্বধলায়।
নেত্রকোনায় এবার শর্ষের ফলন ভালো হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকেরা বেশি করে শর্ষে চাষ করছে। শর্ষে গাছে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণও কম হচ্ছে। কৃষকেরা আশায় আছেন এবার চাহিদা থাকায় বাজারে দাম ভালো পাওয়া যাবে।
নেত্রকোনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার ১০টি উপেজেলায় ৫ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে শর্ষে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ হাজার ৪১০ মেট্রিক টন। এর বিপরীতে এ পর্যন্ত চাষ হয়েছে ৭ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ বেশি হওয়ায় উৎপাদন হবে ৯ হাজার ৬৮৫ মেট্রিক টন। গত বছর রবি মৌসুমে জেলায় শর্ষের আবাদ হয়েছিল ৫ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমিতে। এর আগের বছর শর্ষের আবাদ হয়েছিল ৫ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে। জেলায় প্রায় ৮০ শতাংশ জমিতে বারি সরিষা-১৪ ও বিনা-৯ জাতের শর্ষের চাষ বেশি হয়েছে। ১০টি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি শর্ষে চাষ হয়েছে কলমাকান্দা ও পূর্বধলায়। কলমাকান্দায় ৯৭২ হেক্টর ও পূর্বধলায় ৯৫৫ হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়। এরপর সদর উপজেলায় ৭৮০ হেক্টর, মদন উপজেলায় ৬৯৫ হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়। সবচেয়ে কম আটপাড়ায়, ওই উপজেলায় মাত্র ২০০ হেক্টর জমিতে শর্ষে আবাদ হয়। তবে হাওরাঞ্চল খালিয়াজুরিতে এবার ৪০০ হেক্টর জমিতে শর্ষের আবাদ করা হয়েছে। গত বছর ওই উপজেলায় ৩৯০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়।
জানা গেছে, আগে স্থানীয় জাতের শর্ষে চাষ করায় ফলন কম হতো এবং উৎপাদনে সময় বেশি লাগত। এখন কম সময় ও কম খরচের মধ্যে শর্ষে চাষ করা যায়। এতে জেলায় শর্ষের চাষ দিন দিন বাড়ছে। কম জীবনকালের বারি সরিষা-১৪ জাতের শর্ষে ৭৫-৮০ দিনে ঘরে তোলা যায়। প্রতি হেক্টরে ফলন হয় প্রায় দেড় হাজার কেজি। শর্ষে কেটে ওই জমিতে আবার বোরো ধান আবাদ করা যায়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নেত্রকোনা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. নুরুজ্জামান বলেন, নেত্রকোনায় শর্ষের আবাদ ক্রমশ বাড়ছে। কৃষকদের শর্ষে চাষে এগিয়ে আসতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। বিগত বছরের তুলনায় এবারের ফলন ভালো হওয়ায় চাষিরা খুশি। ভবিষ্যতে জেলায় শর্ষের উৎপাদন বাড়াতে নানামুখী উদ্যোগ নেওয়া হবে।