যশোরে বিএনপির নেতা অনিন্দ্য ইসলামের বাড়িতে আবারও ককটেল হামলা
যশোরে হরতালের আগের রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রয়াত তরিকুল ইসলামের বাড়িতে আবারও ককটেল হামলা চালানো হয়েছে। গতকাল শনিবার রাত ১১টার দিকে যশোর শহরের ঘোপ এলাকার বাড়িতে একে একে অন্তত ১৫টি ককটেল ছোড়ে দুর্বৃত্তরা। পাশের বাড়ি তরিকুল ইসলামের ভাই মরহুম সিরাজুল ইসলামের বাড়িতেও একই সময় ককটেল হামলা চালানো হয়।
তরিকুল ইসলামের ছেলে অনিন্দ্য ইসলাম বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক। অনিন্দ্য ইসলামের মা নার্গিস বেগম যশোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক। হামলার সময় অনিন্দ্য ইসলাম বাড়িতে না থাকলেও নার্গিস বেগম ছিলেন। পাশের মরহুম সিরাজুল ইসলামের বাড়িতে ছিলেন তাঁর ৮০ বছর বয়সী স্ত্রী জাহানারা বেগম।
ককটেল হামলার ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও মুহুর্মুহু ককটেল বিস্ফোরণের শব্দে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় এক কিলোমিটার দূরত্বে যশোর প্রেসক্লাব থেকেও সাংবাদিকেরা বিকট শব্দ শুনতে পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন। এর আগে বিভিন্ন সময়ে অন্তত পাঁচ দফায় একইভাবে বাড়িটিতে ককটেল হামলার ঘটনা ঘটে।
বিএনপি ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাত ১১টার দিকে যশোর শহরের ঘোপ পিলু খান সড়কে তরিকুল ইসলামের বাসভবনে একের পর এক ককটেল ছোড়া হয়। হামলাকারী ব্যক্তিরা পাশে অনিন্দ্য ইসলামের চাচার বাড়িতেও ককটেল নিক্ষেপ করে। বাড়ির প্রধান ফটক ও ভেতরে ককটেল বিস্ফোরিত হয়। বিদ্যুতের তারে ককটেল লেগে বাড়ির বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। একাধিক ককটেলের লাগাতার বিস্ফোরণে ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে গোটা এলাকা। ১০ থেকে ১৫ মিনিটের এ হামলায় প্রকম্পিত হয়ে ওঠে গোটা মহল্লা।
ঘটনাস্থলের একটি সিসি ক্যামেরার ভিডিওতে দেখা যায়, সাত থেকে আটজনের একটি দল এই হামলায় অংশ নেয়। তাদের কারও কারও মাথায় হেলমেট পরা ছিল। অনিন্দ্য ইসলামের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থেকে তারা একের পর এক ককটেল ছোড়ে।
বিএনপির নেতা অনিন্দ্য ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিএনপি বড় কোনো কর্মসূচির আগে প্রশাসনের ছত্রচ্ছায়া আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা আমাদের বাড়িতে বোমা হামলা চালায়। অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে বলতে পারি, এবারও সেই ধারাবাহিকতায় এ হামলা চালানো হয়েছে। এর আগে অন্তত পাঁচবার এমন বোমা হামলা চালানো হয়।’
অনিন্দ্য ইসলাম জানান, আজ রোববার থেকে বিএনপির হরতাল কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। নেতা-কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য এ হামলা চালানো হয়েছে। এ হামলা কোনো রাজনৈতিক শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে না। এটা ভীরু কাপুরুষতা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রাজ্জাক দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাতে অনেক শব্দ শুনেছি। তবে কয়েক দিন ধরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজায় শহরে বাজি ফোটানো হচ্ছে। আমরা ভেবেছি, সেই পূজার বাজি ফুটছে। এ বিষয়ে টহল দল এখনো কোনো তথ্য জানায়নি।’ আজ রোববার সকালে আবারও মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ওসি ফোন ধরেননি।