সিলেটে চলছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো ফিজিক্স অলিম্পিয়াড
সিলেট সরকারি মহিলা কলেজে শুরু হয়েছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো ফিজিক্স অলিম্পিয়াড। আজ শনিবার সকাল সোয়া নয়টার দিকে বেলুন উড়িয়ে অলিম্পিয়াডের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. জামাল উদ্দিন ভূঞা।
আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন উপাচার্য। আর ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ নাজমীন ইসলাম চৌধুরী। অলিম্পিয়াডের ভেন্যু পতাকা উত্তোলন করেন ডাচ্-বাংলা ব্যাংক সিলেট শাখার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ নজমুল হক।
পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা চারটি ক্যাটাগরিতে এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। বাংলাদেশ ফিজিক্স অলিম্পিয়াড কমিটির আয়োজনে এ অলিম্পিয়াডের ম্যাগাজিন পার্টনার হিসেবে আছে ‘কিশোর আলো’ ও বিজ্ঞানবিষয়ক মাসিক ম্যাগাজিন ‘বিজ্ঞানচিন্তা’। টেকনিক্যাল পার্টনার হিসেবে আছে বিডিকম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপাচার্য মো. জামাল উদ্দিন ভূঞা বলেন, পদার্থ ও গণিতে ভালো করলে বিজ্ঞানের যে কোনো শাখায় সফল হওয়া সম্ভব। পরবর্তী জীবনে সফল হতে হলে বিজ্ঞানের চর্চা বাড়াতে হবে। শিক্ষার্থীরা এ দেশের ভবিষ্যৎ। তাদের দিকে তাকিয়ে আছে সমাজ। এ দেশকে তারাই আলোকিত করতে পারে।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে অধ্যক্ষ নাজমীন ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘এই প্রজন্মের হাত ধরে সুন্দর বাংলাদেশ হবে। তোমরা বিজ্ঞানের চর্চা করে নতুন কিছু উদ্ভাবন কর। জ্ঞানের চর্চা করলে অনেক দূর এগিয়ে যাওয়া সম্ভব। এ প্রতিযোগিতা তোমাদের সে পথের সন্ধান দেবে।’
ডাচ্-বাংলা ব্যাংক সিলেট শাখার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ নজমুল হক বলেন, ‘স্মার্ট ও সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যাশা করি তোমাদের কাছে। ডাচ্-বাংলা ব্যাংক সে জন্যই শিক্ষার্থীদের পাশে আছে। প্রতিবছর আমরা ২৫০ কোটি টাকা শিক্ষাবৃত্তি দিই।’
অলিম্পিয়াড উদ্বোধনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক গোলাম দস্তগীর আল কাদেরী ও প্রথম আলো সিলেটের নিজস্ব প্রতিবেদক সুমনকুমার দাশ বক্তব্য দেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. তানভীর হানিফ, ‘বিজ্ঞানচিন্তা’র নির্বাহী সম্পাদক আবুল বাসার, প্রথম আলো বন্ধুসভা সিলেটের সভাপতি অন্তর শ্যাম ও সাধারণ সম্পাদক ইয়াহিয়া হোসেন প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রথম আলো বন্ধুসভা সিলেটের সাংস্কৃতিক সম্পাদক ফারহানা হক।
অধ্যাপক গোলাম দস্তগীর আল কাদেরী বলেন, পরীক্ষায় ভালো করার উপায় হচ্ছে একেবারেই চিন্তা না করা। পদার্থবিজ্ঞানে মনে রাখার চেষ্টা করার দরকার নেই, বুঝতে হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সকাল সাড়ে নয়টায় আঞ্চলিক পর্বের লিখিত পরীক্ষা শুরু হয়। এর আগে অনলাইন বাছাইপর্বে নির্বাচিত ৪৫৪ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে চারটি ক্যাটাগরিতে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী এ আঞ্চলিক পর্বে অংশ নিয়েছেন। ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিটের বাছাই পরীক্ষা শেষে উত্তরপত্র মূল্যায়ন করা হবে। পাশাপাশি সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের মিলনায়তনে চলবে প্রশ্নোত্তর পর্ব ও সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের উত্তর দেবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক গোলাম দস্তগীর আল কাদেরী, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. আবদুল হান্নান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. তানভীর হানিফ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাহাদাত হোসাইন ও পদার্থ বিদ্যার শিক্ষক নাসিমা হক খান।
২০২৩ সালে জাপানের টোকিওতে অনুষ্ঠিত হবে ৫৩তম ফিজিক্স অলিম্পিয়াড। সেটিকে সামনে রেখে দেশব্যাপী ১৩তম ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো ফিজিক্স অলিম্পিয়াড ২০২৩ আয়োজন করা হচ্ছে। বাছাইপর্বের নির্বাচিতদের নিয়ে আয়োজিত হচ্ছে আঞ্চলিক ফিজিক্স অলিম্পিয়াড। পরে আঞ্চলিক পর্বের বিজয়ীদের নিয়ে আয়োজিত হবে জাতীয় উৎসব। জাতীয় উৎসবের বিজয়ীদের নিয়ে ক্যাম্প আয়োজন করা হবে। ক্যাম্প শেষে বাছাই করা প্রতিযোগীদের নিয়ে গঠিত হবে বাংলাদেশ ফিজিক্স অলিম্পয়াড দল। ওই দলই জাপানের টোকিওতে অনুষ্ঠেয় ৫৩তম ফিজিক্স অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে।