মেহেরপুরে চাঁদাবাজির অভিযোগে সাবেক এমপি, ওসিসহ ২১ জনের নামে মামলা
মেহেরপুরের বিএনপি নেতার কাছ থেকে চাঁদা আদায় ও মিথ্যা মামলা দায়ের করার অভিযোগে সাবেক সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান, গাংনী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হরেন্দ্রনাথসহ ২১ জনের নামে মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মেহেরপুর দায়রা ও জজ আদালতে মনিরুজ্জামান বাদী হয়ে মামলার আবেদন করেন।
আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে গাংনী থানার ওসিকে এজাহার নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
বাদী মনিরুজ্জামান গাংনী উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও উপজেলার পশ্চিম মালসাদহ গ্রামের মৃত মহর আলীর ছেলে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন গাংনী থানার সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল হক, বখতিয়ার হোসেন, ইসরাফিল মিয়া ও নারোদ কুমার; কনস্টেবল শরিফ আহমেদ ও রেদোয়ান হোসেন; উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোশাররফ হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মজিরুল ইসলাম, মটমুড়া ইউপি চেয়ারম্যান সোহেল আহম্মেদ প্রমুখ।
মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামানের নির্দেশে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোশাররফ হোসেন বাদীকে (মনিরুজ্জামান) বন্দুকযুদ্ধে হত্যা করার ভয় দেখিয়ে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদার দাবি করেন। চাঁদা দিতে না পারায় তাঁকে তুলে নিয়ে যান মোশাররফ হোসেন এবং মারধর করেন। পরে তিনি দুই লাখ টাকা দেন। এরপরও মোশাররফ গাংনী থানার তৎকালীন ওসি হরেন্দ্রনাথ দত্তকে ডেকে আনেন এবং তাঁর হাতে তাঁকে তুলে দেন। গাংনী থানায় বাদীর বিরুদ্ধে তিনটি নাশকতার মামলা দেওয়া হয়। মামলা থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য পরে আবারও মোশাররফ হোসেন, হরেন্দ্রনাথ দত্ত ও মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। মিথ্যা নাশকতা মামলায় দীর্ঘদিন জেলহাজতে থাকতে হয় মনিরুজ্জামানকে। সাবেক স্বৈরাশাসক শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় থাকায় তিনি মামলা করতে পারেননি। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পরে আদালতে মামলার প্রস্তুতি নেন তিনি।
বাদীর আইনজীবী মারুফ আহমেদ বলেন, মেহেরপুরে গত দুই সংসদ নির্বাচনের আগে অসংখ্য বিএনপি-জামায়াতের নেতা–কর্মীদের ধরে নিয়ে মারধর, চাঁদা আদায়, মিথ্যা নাশকতা মামলা দিয়ে জেলে পুরে রাখা হয়। অনেকে জমি, সোনার গয়না, বাড়ির ছাগল–গরু বিক্রি করে আদালত থেকে জামিন নিতে হয়েছে। মনিরুজ্জামানকে শারীরিক নির্যাতনের পাশাপাশি তাঁর পরিবারের কাছ থেকে চাঁদা নেওয়া হয়েছে। এরপরও তাঁকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে।