গোয়ালন্দে চরমপন্থী দলের নেতাকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা

গোয়ালন্দের কাটাখালী বাজারে সন্ত্রাসীরা গলা কেটে ও গুলি করে হত্যা করেছে এক ব্যক্তিকে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বজনদের আহাজারি। গোয়ালন্দ, রাজবাড়ী, ২২ সেপ্টেম্বরছবি: প্রথম আলো

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় সুশীল কুমার সরকার (৫৮) নামের চরমপন্থী এক নেতাকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ রোববার সন্ধ্যার পর উপজেলার কাটাখালী বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

দুর্বৃত্তরা সুশীলকে গুলি করে ও কুপিয়ে জখম করে ফেলে যায়। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সুশীল উপজেলার পশ্চিম কেউটিল গ্রামের মণীন্দ্রনাথ সরকারের ছেলে। পুলিশের ধারণা, অভ্যন্তরীণ বিরোধে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশ ও নিহত ব্যক্তির স্বজনেরা জানান, আজ সন্ধ্যার দিকে উপজেলার ছোটভাকলা ইউনিয়নের কাটাখালী বাজারের ইমদাদুলের চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন সুশীল। এ সময় অজ্ঞাতপরিচয় তিন যুবক খুব কাছ থেকে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। গুলির শব্দে বাজারের লোকজন ভয়ে দিগ্‌বিদিক দৌড়াতে থাকেন। দুর্বৃত্তরা সুশীলকে রাস্তার পাশে ফেলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। সুশীলের ছোট ভাই সুনীল সরকার রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত ব্যক্তির ছোট ভাই সুনীল সরকার বলেন, গোয়ালন্দ থেকে যাত্রী নিয়ে তিনি কাটাখালী বাজারে যাচ্ছিলেন। পথে খবর পান বড় ভাইকে সন্ত্রাসীরা গুলি করেছে। খবর পেয়ে দ্রুত যাত্রী নামিয়ে কাটাখালী বাজারে ছুটে যান। এসে দেখেন বাজারের ইমদাদুলের চায়ের দোকানের পাশে রাস্তার ঢালে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় কাতরাচ্ছেন তিনি। বাজারের সব দোকানপাট বন্ধ। দু-চারজন থাকলেও কেউ এগিয়ে আসেননি। এক যাত্রীর সহায়তায় ভাইকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন। তিনি বলেন, ভাই বিয়ে করেননি। আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের আগ পর্যন্ত তিনি নিষিদ্ধ চরমপন্থী সংগঠন সর্বহারা পার্টির (লাল পতাকা) সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এখন কিছুই করতেন না।

এদিকে খবর পেয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানার পুলিশ প্রথমে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে সুশীল সরকারের লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে। নিহত ব্যক্তির গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত এবং বাঁ পাঁজরের পেছনের দিকে ছিদ্র দেখতে পেয়েছে পুলিশ।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাকিবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সুশীল নিষিদ্ধঘোষিত চরমপন্থী সর্বহারা পার্টির আঞ্চলিক নেতা ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে তিনটি অস্ত্র ও দুটি হত্যা মামলা আছে। ধারণা করা হচ্ছে, অভ্যন্তরীণ বিরোধে তিনি নিহত হয়েছেন। তাঁর গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত এবং বাঁ পাঁজরের পেছনের দিকে ছিদ্র দেখা গেছে। ফরেনসিক প্রতিবেদনের পর গুলি কি না, নিশ্চিত হওয়া যাবে। লাশের ময়নাতদন্তের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। দুর্বৃত্তদের ধরতে মাঠে কাজ শুরু করেছে পুলিশ।